দিনাজপুরের হিলি শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনারের কক্ষে ঢুকতে লাগবে না অনুমতি। নেই সম্বোধনের বাড়াবাড়ি। স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধে এবং আমদানি-রপ্তানি গতি বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব বাড়াতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের এমন অভিনব উদ্যোগ নিয়ে নজির সৃষ্টি করেছেন শুল্ক স্টেশনটির উপ-কমিশনার কামরুল ইসলাম।
এদিকে উপ-কমিশনারের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে কথা বলতে পেরে খুশি স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে অফিস চলাকালীন হিলি শুল্ক স্টেশনে দেখা যায়, স্টেশনটির উপ-কমিশনারের কার্যালয়ের দরজা খোলা রাখা হয়েছে। অফিস কক্ষে রয়েছে এসি (শীততাপ নিয়ন্ত্রিত)। তারপরেও ব্যবসায়ীদের সমস্যার কথা শুনতে সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়েছে অফিস কক্ষের দরজা। সমস্যা সমাধানে অনুমতি ছাড়াই উপ-কশিনারের কক্ষে যাচ্ছেন সিএন্ডএফ এজেন্ট, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা।
হিলি কাস্টমসের তথ্যমতে, চলতি বছর ২৫ মে হিলি শুল্ক স্টেশনে উপ-কমিশনার পদে যোগদান করেন কামরুল ইসলাম। তিনি যোগদানের পর নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। ফলে ব্যবসার গতির সাথে বেড়েছে সরকারের রাজস্ব। গত বছর থেকে চলতি বছরের মে’ মাস থেকে আগষ্ট পর্যন্ত এই ৪ মাসে আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৫৪,৫৩৮ মে. টন থেকে ৬,২৫০০৭ মে. টন। যা শতকরা হিসেবে প্রায় ৩৭.৫০ বেশি। গত বছরের তুলনায় রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১০ শতাংশ। রপ্তানিমূল্য বেড়েছে গত বছরের তুলনায় ৮২.৮৭ শতাংশ।
হিলি সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোশিয়েশনের সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, উপ-কমিশনারের অফিসের দরজা সব সময় খোলা থাকে আমরা সরাসরি কোন অনুমতি ছাড়া তার কক্ষে প্রবেশ করতে পারি এবং যেকোন সমস্যার কথা তার কাছে সরাসরি বলতে পারি এবং তিনি দ্রুত সমাধান করে দেন।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, এর আগে অন্য কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে এমন দৃশ্য দেখা যেত না। এর আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যবসায়ীদের দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো কিন্তু হিলি কাস্টমসের উপ-কমিশনার কামরুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে আর বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না।
হিলি কাস্টমসের উপ-কমিশনার কামরুল ইসলাম বলেন, যোগদানের পর থেকে এই স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ব্যবসায়ী, সিএন্ডএফ এজেন্ট, রপ্তানিকারকসহ বিভিন্নজনের জন্য আমার অফিস কক্ষ উম্মুক্ত করে রেখেছি। যাতে সেবা প্রার্থীরা বাহিরে দাঁড়িয়ে না থাকে। তারা সরাসরি অফিসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করতে পারে। প্রতিদিনই আমদানি-রপ্তানিকারক এবং সিএন্ডএফ এজেন্টসহ বিভিন্নজনের সমস্যা নিয়ে দেখা করতে আসছেন এবং তাৎক্ষণিক সমাধান পাচ্ছেন। শুধু আমার অফিস কক্ষ না হিলি শুল্ক স্টেশনের প্রতিটি কর্মকর্তার অফিসে ঢুকতে কোন অনুমতি লাগে না।
তিনি আরো বলেন, এসেছি ব্যবসায়ীদের সেবা দিতে, যাতে করে তারা সহজেই সেবা পায়, সেই লক্ষ্যেই আমার এই উদ্যোগ। এতে এই স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানির গতি বাড়বে সেই সাথে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল