বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দুই গ্রামে ৪ দরিদ্র গৃহবধূর নামে আয়কর পরিশোধের নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশপ্রাপ্তদের পরিবারে এ নিয়ে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
এরা হলেন মাহিলাড়া ইউনিয়নের শরিফাবাদ গ্রামের ভ্যান চালক কবির ইসলাম বেপারীর স্ত্রী কল্পনা বেগম, মাহেন্দ্রা চালক ফারুক হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বেগম, দিনমজুর মহসিন বেপারীর স্ত্রী সুবর্না মোহসিন ও বিল্বগ্রাম এলাকার দিনমজুর চাঁনমিয়া সরদারের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম।
নোটিশপ্রাপ্ত কল্পনা বেগম, সেলিনা বেগম ও সুবর্না মোহসিন একই পরিবারের ৩ আপন ভাইয়ের স্ত্রী। নোটিশে তাদের গ্রাম মাহিলাড়া উল্লেখ করা হলেও তারা তিনজনই শরিফাবাদ গ্রামের বাসিন্দা।
এরমধ্যে কল্পনা বেগম ও সুবর্না মোহসিনের নামে গত ২৮ জুলাই, সেলিনা বেগমের নামে ২২ আগস্ট এবং মনোয়ারা বেগমের নামে ২৪ আগস্ট বরিশাল উপ-কর কমিশনার কার্যালয়ের (বৈতনিক) শাখা থেকে নোটিশগুলো ইস্যু করা হয়।
নোটিশে কল্পনা বেগম ও সুবর্না মহসিনকে আয়কর পরিশোধ না করার জন্য কেন তাদের জরিমানা করা হবে না আগামী ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তার কারন জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইভাবে মনোয়ারা বেগমকেও ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। সেলিনা বেগমকে আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু জানান, তার ইউনিয়নের আয়কর পরিশোধের জন্য নোটিশপ্রাপ্ত চারজন গৃহিনী হতদরিদ্র। যারমধ্যে সুবর্না মোহসিন এবং সেলিনা বেগমের স্বামীর নামে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচীর রেশন কার্ড দেয়া হয়েছে। অপর দুই গৃহিনীর স্বামীও দিনমজুর। তাদের সরকারী-বেসরকারি সহায়তা নিয়ে চলতে হয়। হতদরিদ্র পরিবার ৪টিকে আয়কর আওতামুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, আয়কর কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে ৪টি পরিবারকে আয়কর মুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশাল কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার সদর দপ্তর (প্রশাসন) মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, যদি কেউ জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ব্যবহার করে ই-টিআইএন গ্রহণ করেন নিয়ম অনুযায়ী তাকে আয়করের আওতায় নিয়ে আসা হয়। এক্ষেত্রে ওই ৪ জনের আইডি কার্ড ব্যবহার করে কেউ আয়করের জন্য রেজিট্রেশন করেছেন। ফলে তাদেরকে কর রিটার্ন দাখিলের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন দাখিল না করলে নূন্যতম জরিমানা পাঁচ হাজার টাকা। ওই ৪ জন নারী অফিসে কাগজপত্র নিয়ে আসলে তদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার কথা বলেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন