২৪ অক্টোবর, ২০২১ ১৪:৪২
নাটোর

শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, মরদেহ গুমে বাবা সহায়তা করে ছেলেকে

নাটোর প্রতিনিধি

শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, মরদেহ গুমে বাবা সহায়তা করে ছেলেকে

ব্রিফিং করছে পুলিশ

নাটোরের লালপুর উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের আব্দুলপুর মধ্যপাড়া গ্রামের শিশু নুসরাত জাহান বাবলীকে (৭) একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে কিশোর ইলিয়াস হাসান ইমন (১৫)।  মৃত্যু নিশ্চিতের পর মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে বস্তায় ভরে টয়লেটের ট্যাংকিতে ভরে রাখে ইমন। একদিন পর বাবলীর মৃতদেহ আবার ট্যাংকি থেকে তুলে বাবলীর বাড়ি অদূরে একটি ধানক্ষেতে ফেলে রাখে। নিখোঁজের পূর্বে বাবলী ইমনদের বাড়িতে আসার কথা জানাজানি হলে বাবা ফাইজুল ইসলাম জিজ্ঞাসা করলে ইমন হত্যার কথা স্বীকার করে। তখন বাবা ফাইজুল বস্তাবন্দি মৃতদেহটি দূরের আরেকটি ধানক্ষেতে ফেলে আসে। রবিবার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেন জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।

এর আগে শনিবার রাতে কিশোর ইমন ও তার বাবা ফাইজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে লালপুর থানা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাঁসুয়াটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাবলী ওই গ্রামের বাবু হোসেনের মেয়ে।

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, গত ১৯ অক্টোবর নিহত বাবলী ও হত্যাকারী ইমনসহ বেশ কয়েকজন শিশু পিকনিকের জন্য প্রতিবেশী আরশেদ আলীর বাড়িতে যায়। রান্না শেষে গোসলের জন্য সবাই বাড়ি গেলে ইমনও তার বাড়িতে চলে যায়। ইমন তার বাড়িতে একাকী থাকা অবস্থায় শিশু বাবলী তার বাড়িতে যায়। এসময় বাবলীকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে ইমন। বাবলী কান্নাকাটি করলে ইমন তার গলা চেপে হত্যার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে বাবলী নিস্তেজ হয়ে পড়লে ধারালো হাঁসুয়ার উল্টোদিক দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করলে বাবলীর মৃত্যু হয়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, বাবলীকে হত্যার পর তাৎক্ষণিক মরদেহ বাড়ির পরিত্যক্ত টয়লেটে ফেলে দেয় কিশোর ইমন। পরদিন ২০ অক্টোবর রাতে টয়লেট থেকে মৃতদেহ তুলে বাবলীর বাড়ির ৫০০ মিটার দূরে জিয়া মেম্বারের আম বাগানের পাশের ধানক্ষেতে ফেলে রাখে। পরদিন বাবা ফাইজুল ইমনের কাছে জানতে চান তাদের বাড়িতে বাবলীর আসার ঘটনা সত্য কি না। এসময় বাবার কাছে হত্যা ও মরদেহ রেখে আসার স্থান বলে দেয় ইমন। তখন বাবা ফাইজুল ছেলেকে বাঁচাতে ধানক্ষেত থেকে বস্তাটি সরিয়ে আরেকটু দূরে মাসুদ রানার ধানক্ষেতে ফেলে আসে।

লিটন কুমার সাহা আরও বলেন, হত্যার দিন দুপুরে আরশেদ আলীর বাড়িতে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে বাবা বাবু হোসেন আত্মীয় স্বজনদের জানানোর পাশাপাশি আব্দুলপুর এলাকায় মাইকিং ও রেলস্টেশনে পোস্টারিং করেন। নিখোজের চতুর্থ দিনে বাবা বাবু জানতে পারেন তার বাড়ির ৭০০ মিটার দূরে একটি জমিতে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি মৃতদেহ পড়ে আছে৷ এসময় বাবু সেখানে গিয়ে মেয়ের অর্ধগলিত মরদেহ সনাক্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জোবায়ের, লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুর রহমান, গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ জালাল উদ্দীনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর