বগুড়ার শেরপুরে খানপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি ভেঙে প্রতীক বরাদ্দের আগেই ডিজিটাল প্যানা-পোস্টার সাটিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত এক চেয়ারম্যান প্রার্থী। সেইসঙ্গে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতিসহ নানা হুমকি-ধামকি দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
প্রতিকার চেয়ে রবিবার দুপুরের পর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন খানপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম রাঞ্জু।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় এই উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও দাখিল সম্পন্ন হলেও প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। আগামী ২৭ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। কিন্তু তার আগেই খানপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী পরিমল দত্ত ডিজিটাল ব্যানার-পোস্টার সাটিয়ে প্রচার-প্রচার শুরু করেছেন।
প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া না হলেও আওয়ামী লীগের এই চেয়ারম্যান প্রার্থী খানপুর ইউনিয়নের শালফা, ছাতিয়ানী, গজারিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে এসব ব্যানার-পোস্টার সাটানো হয়েছে। যা নির্বাচনী আচরণ বিধির সম্পূর্ণ লঙ্ঘণ ও বেআইনি। নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং পরিপন্থী।
খানপুর ইউনিয়নের চেয়াম্যান ও নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম রাঞ্জু বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের আগেই এলাকার মোড়ে ডিজিটাল ব্যানার-পোস্টার লাগিয়েছেন। নির্বাচনী আইনকে বৃদ্ধাঙলি দেখিয়ে একতরফা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, আমার কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমাকে ভোট না দিয়ে নানা হুমকি-ধামকি দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাদের নিকট ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী পরিমল দত্ত জানান, আগে ভাগেই নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টার তৈরি করে নেতাকর্মীদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেসব লাগানোর কথা নয়। প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকেই ওইসব লাগানোর কথা। এছাড়া তার প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধামকি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না বলে দাবি করেন তিনি।
খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা সরকার জানান, প্রতীক বরাদ্দের আগেই ডিজিটাল প্যানা ঝুলানো ঠিক নয়। সকল প্রার্থীকে আচরণবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরপরও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এই উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচনে যাচাই-বাছাই শেষে চেয়ারম্যান পদে ৪৩ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১০৬ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৬ অক্টোবর প্রার্থিতা প্রত্যাহার, ২৭ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ হবে। এরপর শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। ভোটগ্রহণ করা হবে ১১ নভেম্বর।
বিডি প্রতিদিন/এমআই