২৬ অক্টোবর, ২০২১ ১৯:০৪

সুন্দরবনে শুঁটকি মৌসুম শুরু, জেলেরা যাচ্ছেন অস্থায়ী পল্লীতে

বাগেরহাট প্রতিনিধি

সুন্দরবনে শুঁটকি মৌসুম শুরু, জেলেরা যাচ্ছেন অস্থায়ী পল্লীতে

শুঁটকি আহরণে জেলেরা যাচ্ছেন অস্থায়ী পল্লীতে।

সুন্দরবনের দুবলার চরে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে শুঁটকি মৌসুম। ৫ মাস ধরে চলা এই শুঁটকি আহরণ মৌসুম চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এই মৌসুমকে ঘিরে বঙ্গোপসাগর পাড়ে লোকালয় থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনের দুবলার চরে যেতে শুরু করেছেন উপকূলের জেলে-মহাজনরা।

প্রায় ১০ হাজার জেলে-মহাজন মঙ্গলবার মধ্যরাতে প্রথম দিনে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চিলা থেকে দুবলারচরে অস্থায়ী শুঁটকি পল্লীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করছেন। জেলেরা নৌপথে তাদের থাকার অস্থায়ী ঘর, মাছ শুকানো মাচা ও মাছ সংরক্ষণের গোলা তৈরিসহ খাদ্য সামগ্রী সাথে নিয়ে গেছেন। মঙ্গলবার ভোরে জেলেরা সুন্দরবনের দুবলার চরে পৌঁছে বঙ্গোপসাগরে নেমে পড়েছে শুঁটকির জন্য মাছ আহরণে। এবার শুঁটকি মৌসুমে দুবলার চরে জেলেদের জন্য ৯৮৫টি ঘর ও ৬৬টি ডিপোর অনুমোদন দিয়েছে সুন্দরবন বিভাগ।

প্রতি বছর শুঁটকি আহরণ মৌসুমে বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের দুবলার চর, মেহের আলীর চর, আলোরকোল, অফিস কিল্লা, মাঝের কিল্লা, শেলার চর, নারিকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয়া, বড় আমবাড়িয়া, মানিক খালী, কবরখালী, চাপড়াখালীর চর, কোকিলমনি ও হলদাখালীর চরে অস্থায়ী পল্লী তৈরি করে প্রায় ২০ হাজার জেলে-মহাজন শুঁটকি আহরণ করে থাকে।

২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকায় এবার কিছুটা আগে হচ্ছে মৎস্য আহরণ ও শুঁটকি প্রক্রিয়ার কাজ। আগামী ৫ মাস মোংলা, রামপাল, খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী ও বরিশালসহ সুন্দরবন উপকূলের হাজারো জেলে মাছ আহরণ ও শুঁটকি তৈরির জন্য সাগরপাড়ে অস্থায়ী বসতি গড়বেন। এছাড়া চট্টগ্রাম অঞ্চলের জেলে ও মৎস্যজীবীরাও যাবেন দুবলার চরে।

সুন্দরবন বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, গত মৌসুমে শুঁটকি আহরিত হয়েছিল ৪৫ হাজার মেট্রিক টন সামুদ্রিক সাদা মাছ ও চিংড়ি মাছ ও শিলা কাঁকড়া। একই সাথে সুন্দরবনের নদ-নদী থেকে আহরিত হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন রূপালী ইলিশ। সুন্দরবনের শুঁটকি পল্লীর জেলেরা কমবেশি ৩০ প্রকার জাল ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বাছাই করে রোদে শুকিয়ে বিদেশে রফতানির জন্য উপযোগী করে প্যাকেটজাত করে। এবার শুঁটকি মাছ থেকে চলতি মৌসুমে ৬ কেটি ২২ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করবেন বলে আশা করছে সুন্দরবন বিভাগ। ২৬ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ  পর্যন্ত চলবে সুন্দরবনের শুঁটকি পল্লীতে সামুদ্রিক মাছসহ চিংড়ি ও কাঁকড়া আহরণ।

মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন সদর দফতরের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শেখ মেজবাহ উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, সাগরে জেলেরা যাতে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে এবং সাগরে চলতি শুঁটকি মৌসুমে মাছ আহরণ করতে পারে, সেজন্য কোস্টগার্ডের টহল অব্যাহত থাকবে।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, এবারের শুঁটকি মৌসুমে দুবলার চরে জেলেদের জন্য ৯৮৫টি ঘর ও ৬৬টি ডিপো তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মৌসুম জুড়ে দুবলার চরে প্রায় ২০ হাজার জেলের সমাগম থাকবে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলবে সুন্দরবনের শুঁটকি মৌসুম। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে জেলেদের দুবলায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর