ঝিনাইদহে করোনার ভয়াল থাবা কিছুটা কমলেও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আশঙ্কাজনক ভাবে না বাড়লেও ছোট জেলা হিসেবে নেহাতই কম না ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা।
এদিকে, গত বুধবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসি খাতুন (৩৫) নামে এক নারী ও একজন পুরুষ মারা গেছেন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। হাসি খাতুন হরিণাকুন্ডু উপজেলার পারমথুরা পুর গ্রামের কাওছার আলীর স্ত্রী।
এখন পর্যন্ত চলতি বছরের আগস্টে সাতজন, সেপ্টেম্বরে ১০ ও অক্টোবরে ১০ জন আক্রান্তসহ মোট ২৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সেকারণে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ২৫০ শয্যা আধুনিক সদর হাসপাতাল। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নিচতলার একটি ওয়ার্ড ফাঁকা রয়েছে। এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশিদ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহে ডেঙ্গু এখনো রেডলাইন ক্রস না করলেও আক্রান্তের সংখ্যা নেহাতই কম না। তবে বেশিরভাগ রোগীই আসছে রাজধানী ঢাকা থেকে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৫ শতাংশ রোগী এসেছে রাজধানী থেকে। শহর বা অন্যান্য পৌরসভা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী না আসলেও আসছে মফস্বল এলাকা বা গ্রাম থেকে।
ডেঙ্গু রোগী স্বজনদের দাবি, আরও ব্যাপকভাবে জনসচেতনতা দরকার এবং জ্বর না কমলে দ্রুত টেস্ট করাতে হবে। এরই পাশাপাশি দরকার গ্রামপর্যায়ে ব্যাপকভাবে মশা নিধন কার্যক্রম।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিএম রেজাউল করিম জানান, দায়িত্ব নিতে হবে সরকারি দপ্তরগুলো ও জনপ্রতিনিধিদের। তারা যদি ব্যাপকভাবে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও মশা নিধন করতে না পারে, তাহলে ঝিনাইদহসহ সারাদেশে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।
ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. জাকির হোসেন জানান, প্রতিদিন দুই/একজন করে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। রোগীরা এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে এবং সেবাদানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, বাড়ির আশপাশে পানি জমিয়ে রাখা যাবে না ও সকল স্থানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখতে হবে। তবে বর্ষা কমে গেলে এই রোগ অনেকটা কমতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু জানান, সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি, যেন কোনোভাবেই ডেঙ্গু শহরে মারাত্মক রূপ ধারণ করতে না পারে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই