জাগতিক পাপ মোচনের আশায় কৃষ্ণ নাম ধ্বনিতে হাজার হাজার পূণ্যার্থী ভক্তের সমাগমে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব রাস পূজা। জাগতিক সুখ-শান্তি কামনায় করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় করা হয়েছে বিশেষ প্রার্থনা।
শুক্রবার ঊষা লগ্নে রাস স্নান শুরু হয়ে সকাল ৯টায় শেষ হয়। এই উৎসবকে ঘিরে দু’দিন আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুয়াকাটায় আসতে শুরু করে পূণ্যার্থী-ভক্তরা। সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমূদ্র সৈকতে আগত পূণ্যার্থী-ভক্তরা রাস পূর্ণিমা তিথিতে মধ্যরাতে নাম সংকীর্তন, পূজার্চনা, নাম কীর্তন ও পদাবলী কীর্তন শেষে ঊষালগ্নে করেছেন পূণ্যস্নান। গত বুধবার বিকেলে অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস-সমুদ্র স্নানের মাধ্যমে জাগতিক পাপ মোচন হয় আর পূর্ণ হয় মনের বাসনা। সারা রাত ধরে চলে পূজার্চনা, র্কীতন, ভগবতপাঠসহ ধর্মীয় কার্যক্রম। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস সমুদ্র স্নানের মাধ্যমে জাগতিক পাপ মোচন হয় আর পূর্ণ হয় মনের বাসনা। তাই প্রতিবছর তারা রাস উৎসবে অংশ নিয়ে সমুদ্র স্নান করে এ উৎসব পালন করে থাকে ভক্তরা।
রাঁস পূর্ণিমায় পূণ্যার্থী ও পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে সাগর সৈকত পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার বীচে ঊষা লগ্ন থেকে ভক্তরা হরে কৃষ্ণ হরে রাম ধ্বনিতে মুখরিত উঠে পাপ মোচন ও পূণ্য লাভের আশায় পুরো এলাকায়। কেউ কেউ আবার বিভিন্ন রোগ-শোক ধর্মীয় রীতি অনুয়ায়ী মানত করা পূজা-অর্চনা সম্পন্ন করে পুরোহীত এনে সাগর সৈকতে। মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, ধান-দুর্বা ও বেল পাতা সমুদ্র জলে অর্পণ করে গঙ্গাস্নান সম্পন্ন করেন পূণ্যার্থীরা। স্নান শেষে পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন তারা। কেউ কেউ শ্রী শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ করছেন। কুয়াকাটা মুখরিত হয় জন-মানুষের মিলন মেলায়। শুধু পূণ্যার্থীরাই নয়, নানা ধর্ম-বর্নের মানুষ মিলিত হয় রাস লীলা, পূজা, সমুদ্র স্নান।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস মেলায় আগত পূণ্যার্থীদের স্বাস্থবিধি মানতে ও নিরাপত্তা দিতে আনসার ভিডিপি, পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলে পর্যটন নগরী কুয়াকাটাকে। বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা ও চেক পোস্ট এর মাধ্যমে পূণ্যার্থীদের নজর রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মেডিকেল টিম রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক ছিলো ডুবুরি দল।
কুয়াকাটা রাসপুজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজল বরন দাস বলেন, উষালগ্নে সাগর সৈকত কুয়াকাটার বীচে পাপ মোচন ও পূণ্য লাভের আশায় স্নানে পূণ্যার্থী ও পর্যটকদের ঢল নেমেছে। সী-বীচে অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন মানত করা পূজা দিয়েছেন পুরোহীত এনে। তবে শুধু পূণ্যার্থীরাই নয়, নানা ধর্ম-বর্নের মানুষ মিলিত হয়েছে রাস পূজা ও সমুদ্র স্নানানুষ্ঠানে। করোনা থেকে মুক্তি পেতে সকলেই প্রার্থনা করেছেন পূজার্চনার মধ্য দিয়ে। শান্তি পূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়েছে এবারের রাস উৎসব। আগামীতে আরও বড় পরিসরে পালন করা হবে এ উৎসব।
মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, কড়া নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক নজরদারীর মধ্য দিয়ে রাস উৎসবের পূজা ও স্নান নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন