রাজশাহীর বাগমারার হামিরকুৎসা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিয়ে আবার তা ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটেছিল। ওই নির্বাচনেও আনোয়ার হোসেনকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ার পর আওয়ামী লীগ প্রার্থী পরিবর্তন করেছিল।
এ বছর আনোয়ার হোসেনের বদলে হামিরকুৎসা ইউনিয়নে রাজশাহী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সানোয়ারা খাতুনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সোমবার রাতে তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি উপজেলার ১৬ ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২ ডিসেম্বর রাজশাহী ও রংপুর আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সভায় উপজেলার ১৬ ইউপি থেকে প্রাথমিকভাবে দলীয় প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে হামিরকুৎসা ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী হিসেবে আনোয়ার হোসেনের নাম প্রকাশ করা হলে তিনি স্থানীয় এমপিকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর নির্বাচনী এলাকায় নৌকার প্রার্থী হিসেবে আনোয়ার প্রচার ও গণসংযোগ শুরু করেন।
তবে গত শুক্রবার রাতে প্রার্থীর তালিকা পরিবর্তনের গুঞ্জন শুরু হয়। হামিরকুৎসা ইউনিয়নে আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে সানোয়ারা খাতুনকে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে স্থানীয়ভাবে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর গত শনিবার দলের বোর্ড সভায় উপজেলার ১৬ ইউপির মধ্যে ১৪ ইউপিতে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হলেও হামিরকুৎসা ও যোগীপাড়া ইউপির প্রার্থী পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য রাখা হয়।
পরে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি এনামুল হক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত ১৪ ইউপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নের চিঠি সংগ্রহ করেন। এরপর গত রবিবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪ জনের হাতে তিনি ওই চিঠি তুলে দেন। তখনও যোগীপাড়া ও হামিরকুৎসা ইউপির প্রার্থী মনোনয়নের চিঠি না আসায় দলীয় প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে যায়।
অবশেষে সোমবার রাতে হামিরকুৎসা ইউপিতে আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে সানোয়ারা খাতুনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়। ওই দিন রাতেই শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত চিঠি হাতে পান সানোয়ারা খাতুন। মনোনয়নপত্রসহ এ–সংক্রান্ত একটি ছবিও তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। সানোয়ারা খাতুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে হামিরকুৎসা ইউপির চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
এদিকে আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি মনোনয়নের তালিকা থেকে বাদ হওয়া বা মনোনয়নের চিঠি—কোনোটিই পাননি। তাই এখনও মাঠে আছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনের প্রথম দফায় আনোয়ার হোসেনকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। পরে তার বদলে শাফিনুন্নাহার নামের আওয়ামী লীগের এক নেত্রীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। ওই নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনোয়ার হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল