২৮ জানুয়ারি, ২০২২ ১৩:৪৮

নাটোরে সুগার মিলের ২০০ মে. টন আখের রস ড্রেনে ফেলায় পাঁচ কর্মকর্তাকে শোকজ

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে সুগার মিলের ২০০ মে. টন আখের রস ড্রেনে ফেলায় পাঁচ কর্মকর্তাকে শোকজ

নাটোরের লালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে মাড়াইকৃত প্রায় ২০০ মেট্রিকটন আখের রস ও সিরাপ ফেলে দেওয়ার (ড্রেনআউট) অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ কমকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। 

বুধবার দিবাগত রাত ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত মাড়াইকৃত আখের রস ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়।

মিল সূত্রে জানা যায়, ফ্যাক্টরির ফ্যান বোর্ডে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় স্টিম উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ বন্ধ হওয়ার কারণে মঙ্গলবার রাতে টানা ৭ ঘণ্টা আখ মাড়াই বন্ধ রাখতে হয়। এর আগে চলতি মৌসুমের গত ৫ ও ৭ ডিসেম্বর রাত দুইটা হতে ভোর ৫টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা করে মাড়াই বন্ধ থাকে।

মিলের বর্তমান মাড়াই ক্ষমতা দৈনিক ১৬০০ মেট্রিক টন। এখানে রস ধারণের ক্ষমতা প্রায় ১৭০০ মেট্রিক টন। রস প্রক্রিয়াকরণ করতে ১৩ থেকে ১৪ কেজি গরম বাষ্প প্রয়োজন হয়। রস প্রক্রিয়া করতে যথেষ্ট পরিমাণ গরম বাষ্প না পাওয়া না গেলে চিনির স্বাভাবিক উৎপাদন ব্যাহত হয়। 

মিলের শ্রমিকরা জানান, মিল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বুধবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত প্রায় ২০০ মেট্রিক টন মাড়াইকৃত আখের রস ফেলে দেওয়া হয়। এর আগে চলতি মৌসুমেই গত ৫ ও ৭ ডিসেম্বর রাত ২টা হতে ৫টা পর্যন্ত একইভাবে তরল চিনি ফেলে দেওয়া হয়। এতে মিলের প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি।

মিলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) নবনির্বাচিত সভাপতি খন্দকার শহীদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন বলেন, দুর্নীতিমুক্ত ও লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিনিকলটিকে টিকিয়ে রাখতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আখ না পাওয়ায় আগামী ৩০ জানুয়ারি মাড়াই মৌসুম সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। আখ সংগ্রহ কমিটি থাকলেও প্রত্যক্ষভাবে তাদের কার্যক্রম চোখে পড়ে না। ড্রেনআউট করা সিরাপ ও রস পরীক্ষায় চিনির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।

মিলের মহাব্যবস্থাপক (ফ্যাক্টরি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মিলের ক্রাসিং বন্ধ থাকলে বয়লার হিটারের ভেতর কাঠের প্লাগ চুয়ে কিছু রস পড়তে পারে। এই রসের সঙ্গে কোনও চিনি থাকে না।

মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কৃষিবিদ হুমায়ুন কবির বলেন, মিলের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মঙ্গলবার রাতে টানা ৭ ঘণ্টা মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলায় মাড়াই কার্যক্রম ব্যাহত করার অভিযোগে পাঁচ কমকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দেওয়ার জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শোকজ প্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন- ফ্যাক্টরি ম্যানেজার, ডেপুটি চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ম্যানেজার (উৎপাদন) ও দু’জন ডেপুটি ম্যানেজার (উৎপাদন)।

তিনি আরও বলেন, জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করা হবে।


বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর