বগুড়ায় প্রেমঘটিত কারণেই ছুরিকাঘাতে মিরাজ আলী (২২) নামে যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উন্মোচনসহ এক কিশোরসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও রক্তমাখা জ্যাকেট উদ্ধার হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে অভিযানে তাদেরকে জেলার সোনাতলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- দশম শ্রেণী পড়ুয়া এক ছাত্র, সোনাতলার নওদা বগা বুড়িতলার মুন্নু মিয়ার ছেলে তারেক রহমান (১৮) এবং বগুড়া শহরের রহমাননগর এলাকার আবদুল কুদ্দুসের ছেলে মো. মিঠুন মিয়া (২৮)।
মূলত প্রেমঘটিত কারণেই মিরাজকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। বুধবার দুপুর একটায় নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি অবগত করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের পৌর পার্কে ছুরিকাঘাতে মিরাজকে (২২) খুন করা হয়। নিহত মিরাজ শহরের বৃন্দাবনপাড়া দক্ষিণপাড়ার আবদুর রহমানের ছেলে। তিনি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য ছিলেন। এ ঘটনায় একই এলাকার নাজমুল হোসেন (১৬) নামে এক যুবক আহত হন। তিনি এখন বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া কথিত প্রেমিক ও মূল অভিযুক্ত ১৬ বছর বয়সী কিশোরের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী আরও জানান, নিহত মিরাজের সাথে বগুড়া শহরের বাদুরতলা এলাকার এক মেয়ের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন আগে ওই মেয়ের সাথে ফেসবুকে পরিচয় হয় (কথিত প্রেমিক) মূল অভিযুক্তের। এরপর তাদের দু'জনের সাথে মেয়েটি ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ আদান-প্রদানসহ কথাবার্তা চলতে থাকে।
তখন মিরাজ মেয়েটির কাছে জানতে চাইলে মেয়েটি জানায়, তাকে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করে ও প্রেমের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। এ নিয়ে মিরাজ এবং কথিত প্রেমিক দু-জন দু-জনকে ফেসবুক ও মুঠোফোনে বারবার হুমকি দিয়ে আসছিল। ঘটনাটি মীমাংসার জন্য মিরাজ অভিযুক্ত কিশোরকে বগুড়া শহরের পৌর পার্কে ডাক দেয়। মঙ্গলবার বিকালে অভিযুক্ত কিশোর তার দুই সহযোগী তারেক ও মিঠুনকে নিয়ে পার্কে আসে। তবে ঘটনাস্থলে মীমাংসার জন্য প্রেমিকার উপস্থিত থাকার কথা থাকলে সে আসেনি।
একপর্যায়ে মিরাজ ও তার বন্ধু নাজমুলের সাথে অভিযুক্তদের কথা কাটাকাটি ও ধাকাধাক্কিসহ শুরু হয়। ওই সময় কথিত প্রেমিক কিশোরের সহযোগী মিঠুন তার কাছে থাকা চাকু দিয়ে মিরাজ ও নাজমুলের ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন মিরাজ এবং তার সাথে থাকা নাজমুলকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মিরাজকে মৃত ঘোষণা করেন এবং নাজমুলকে চিকিৎসা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনার রাতেই নিহত মিরাজের বড় ভাই আতাউর অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মঙ্গলবার রাতব্যাপী অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আসামীদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর