ইউক্রেনে আটকে পড়া ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র নামের জাহাজের ২৯ জনের মধ্যে বরগুনার হাদিসুর রহমান রকেট হামলায় নিহত হয়েছেন। অলিভিয়া বন্দরে আটকা পড়া বাকি ২৮ নাবিক ও ক্রু সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনে আটকে পড়াদের মধ্যেে আছেন সাতক্ষীরার বাসিন্দা ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খান। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরও তার পরিবারের সবাই এখনও উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন।
ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খান (৩৬) সাতক্ষীরা শহরের নারকেলতলা এলাকায় সেলিম খানের ছেলে। বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিআরডিসি কর্মকর্তা। সেলিম খান জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে কথা বলেছেন মনসুরুল। জানিয়েছেন ভালো আছেন। তিনি বলেন, ‘ সন্ধ্যার দিকে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে তাদেরকে নামানো হয়েছে। এখন সেখানেই রয়েছে। ছেলেটার জন্য বাড়ির সকলেই খুব চিন্তিত। ওর মা ও স্ত্রী সারাদিন কান্নাকাটি করছে।’
যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেনে আটকা পড়েই বাড়িতে খবর পাঠিয়েছিলেন মনসুরুল। এলাকায় তিনি গিনি নামেই পরিচিত। তার তিন ছেলে, ফাহিমি ও ফারহান (১০) যমজ। ছোট ছেলে ফারদিনের বয়স তিন বছর। যমজ দুই ছেলে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মনসুরুলের বাবা আরও জানান, ১৬ বছর আগে জাহাজের ক্যাপ্টেনের চাকরিতে যোগ দেন মনসুরুল। সবশেষ তিন মাস আগে বাড়িতে এসেছিলেন। ৬-৭ মাস পর পর বাড়িতে আসেন। জাহাজে রকেট হামলার পর এই প্রথম পরিবারের সাথে কথা হয়েছে। সেখানে খাবারের সমস্যা হচ্ছে। অল্প খাবার খাচ্ছে জাহাজে আটকা পড়া বাংলাদেশিরা।
সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ রাখছে জানিয়ে সেলিম খান বলেন, ‘শিপিং অফিস থেকে যোগাযোগ করে বলেছেন আমরা উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছি। আপনারা দুঃশ্চিন্তা করবেন না। সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইউক্রেনীয়রা মাইন বসিয়েছে রেখেছিল সেকারণে বাংলাদেশী জাহাজটি বের হতে পারেনি। ওখানেই আটকা রয়েছে। সেখানে নেটওয়ার্ক ও ফোনে চার্জ না থাকায় খুব বেশী যোগাযোগ করতে পারছে না ‘
মনসুরুলের একমাত্র ছোট বোন সাবরিনা খান জানান, ‘জাহাজে আটকা পড়া সবাইকে নিরাপদে রাখা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে খুব তাড়াতাড়ি আটকা পড়া ২৮ নাবিককে নিরাপদে দেশে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পেল্যান্ড অ্যাম্বাসির কথা হয়েছে তারা তাদের দেশে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাবে সেই আশ্বস্ত করেছেন। আমারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি আমাদের ভাইয়ের জন্য।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল