বগুড়ায় করোনাভাইরাসের প্রভাব কমে যাওয়ার পর প্রথম রমজানে ইফতার পণ্য সামগ্রীর দাম ছিল বেশ চড়া। কোন রেস্টুরেন্টের সঙ্গে কোনটারই দামের মিল নেই। মূল্য বৃদ্ধির মধ্যেই রমজানের প্রথম দিনেই বগুড়ায় ইফতারের দোকানগুলোতে সাধারণ মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। তবে বরাবরের মত এবারো বগুড়ার ইফতারে এখনো জনপ্রিয় ধরে রেখেছে সাদা দই। পুরো শহরে সাদা দই বিক্রির হিড়িক পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাহে রজমান উপলক্ষে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৌশলে ইফতার সামগ্রীর দাম বাড়িয়েছে। এবারের ইফতারের খাবারের তালিকায় বগুড়ার আকবরিয়া হোটেল ঢাকার চকবাজারের বেশ কিছু ইফতার সামগ্রী নিয়ে বসেছে। দই বিক্রির পাশাপাশি ইফতার সামগ্রী বিক্রিতে দেখা গেছে একেক রেস্টেুরেন্টে একেক দাম। শহরের জলেশ্বরীতলায় ইফতার সামগ্রী বিক্রিতে সবচেয়ে বেশি দাম হাঁকা হয়। এই এলাকায় নামী ও অভিজাত হোটেলের ইফতার সামগ্রীর দাম আকাশ ছোঁয়া। বগুড়ার ঐতেহ্যবাহি আকবরিয়া হোটেলে প্রথমবারের মত ঢাকার চকবাজারের ইফতার সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছে।
ঢাকার ‘বড়বাপের পোলায় খায় ঠোঙ্গায় ভরে নিয়ে যায়’ নামের কয়েকটি খাবারের মিশ্রন (মুরগী, ঘি, মটর ডাল সিদ্ধ, খাসির কলিজা, ডিম) বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি। এখানে খাসির রান বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি, কলিজা ভুনা, চিকেন ফ্রাই ৫১০, কোয়েল পাখি ৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া হালিম বাটি ছোট ৮০ টাকা, বুট ১৮০ টাকা, ছোলা ১৮০ টাকা, অন্যান্য ইফতারসামগ্রীও ১৮০ টাকা বিক্রি করছে। রয়েছে চিকেন বল, জালি কাবাব, শামী কাবাব, মিল্ক ব্রেড পাকুড়া, চিকেন ব্রেড পাকুড়া, বিফ চপ, লাচ্ছি, ফালুদা ইত্যাদি। আকবরিয়া কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো খাবার ঢাকার মানে এখন বগুড়ায় পাওয়া যাবে। বগুড়ার মানুষকে ঢাকার খাবার তুলে দিতেই এবার প্রথমবারের মত আকবরিয়া ঢাকার ইফতার সামগ্রী পসরা সাজালো। ঢাকা থেকে বাবুর্চি নিয়ে এসে এই রান্না করা হয়েছে।
ঢাকার বাবুর্চি মো. খোকন মিয়া জানান, তিনি গত প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে তার বাবার সঙ্গে ঢাকার চকবাজারে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করে আসছে। এবারই প্রথম বগুড়ায় এসে আকবরিয়াতে কাজ করছেন। তিনিসহ তার কয়েকজন সহযোগি ঢাকার চকবাজারের সমস্ত ইফতার সামগ্রী তৈরী করেছেন।
বগুড়ার দই ব্যবসায়ীরা জানান, প্রচন্ড রোদ থাকায় সাদা দইয়ের চাহিদা বেড়েছে। সাদা দই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলে বগুড়ার মানুষ সাদা দইয়ের প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়েছে। রোজা বলে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে চাহিদামত দই সরবরাহ করা যায় না। প্রতিটি সাদা দইয়ের হাড়ি বিক্রি করা হয়ে থাকে ৮০ থেকে ১০০ টাকা করে। কিছু সাদা স্পেশাল দই বিক্রি করা হয় ১৪০ টাকা করে। দই তৈরীর সময় যতটা প্রয়োজন তা পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদা প্রচুর রয়েছে। তারা আরো জানান, একদিকে রোজা। আরেক দিকে প্রচন্ড গরম। এই গরমে রোজাদার ব্যক্তিগণ ঠান্ডা পানীয় খাবার খেতে চায় বেশি। সাদা দই শরীরকে ঠান্ডা করে। এই কারণে বগুড়ায় ইফতারে সাদা দইয়ের চাহিদা বেশি।
বিডি প্রতিদিন/এএ