ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে পৌরসভার টোল আদায়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দুইজন নিহতের ঘটনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। নিহত আক্তার হোসেনের বাবা বাবু তালেব বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
জড়িত সন্দেহে আটক আব্বাস আলী এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে সলেমানপুর এলাকা থেকে ইমন হোসেন ডন ও আব্বাস আলী নামে ২ যুবককে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, শহিদুজ্জামান সেলিম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পৌরসভায় চৌগাছা মেইন বাসস্ট্যান্ড, কলেজ বাসস্ট্যান্ড, বলুহর স্ট্যান্ড, মেইন বাসস্ট্যান্ড, ব্রিজঘাট ও দুধসরাসহ ৬ স্পটে টোলের চাঁদা আদায়ের জন্য ৬ জনের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিদিন প্রত্যেক ট্রাক ও পায়ারট্রিলার থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করা হয়। ৬টি স্পটের মধ্যে চৌগাছা মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার টাকা আদায় হয় আর বাকিগুলো থেকে ৭০০-১,০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরও চৌগাছা মেইন বাসস্ট্যান্ডের টাকা আদায় করেছিলেন আশরাফুল ইসলাম। কিন্তু এবার ওই বাসস্ট্যান্ডটি তাকে দেওয়া হয়নি।
যে দুইজন মারা গেছেন ও ২জন আহত হয়েছেস সবাই মেয়র সেলিমের লোক। এসব কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন মেয়রের ভাই আক্তারুজ্জামান শাহিন মিয়া। তার ভাই মেয়র হওয়ার পর নতুন পদবি ও নতুন নাম হয়েছে শাহিন মিয়া।
এ ঘটনায় কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র সহিদুজ্জামান সেলিম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাজান আলী দাবি করেন, সংঘর্ষের সাথে জড়িত কেউই তাদের লোক না।
মেয়র বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে যাদের টোল আদায় করতে দেওয়া হয়েছে, তারাই টোল আদায় করতে আসছিল। অপর গ্রুপ তাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের মধ্যে কেউ যুবলীগ ও কেউ ছাত্রলীগ করে। তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি আশরাফুল ও তার লোকজন ঘটিয়েছে।
অন্যদিকে শাহাজান আলী বলেন, আমি কোনো গ্রুপের রাজনীতি করি না। ঘটনার সাথে জড়িতরা কাদের লোক ছিল, কোন গ্রুপ করে তা কোটচাঁদপুরবাসী জানেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কোটচাঁদপুর সার্কেল) মোহাইমিনুল ইসলাম জানান, ইমন হাসান ডন এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। সেই সাথে পৌরসভার দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য,-গত বৃস্পতিবার সকালে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর শহর এলাকায় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের আধিপত্য বিস্তার ও পৌরসভার টোল আদায়কে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জীবন হোসেন (১৯) ও আক্তার হোসেন (২০) নামে দুইজন নিহত হন। এ ছাড়া সাব্বির হোসেন ও সোহাগ নামে দুইজন গুরুতর আহত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ