বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সুলতান হাওলাদারের টর্চার সেলে আটকে রেখে দুই ভাইকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মেম্বারপুত্র জাকির ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে প্রথমে মোংলা পের্ট পৌরসভার সিঙ্গাপুর মার্কেট সংলগ্ন কক্ষে একটি আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর এলাকায় গুচ্ছগ্রামের টর্চার সেলে আটকে রাখা বিনোদ সরকার (৪৫) ও তার ভাই বিপ্লব সরকারকে (৩৮)। তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে এক নারীও হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত দুই ভাইকে উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর জড়িতদের গ্রেফতারে মোংলা থানা পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জানান, শালিস বিচারের নামে শনিবার সকাল ১০ টার দিকে মোংলা পোর্ট পৌরসভার বাংলাদেশ হোটেলের সামনে থেকে বিনোদ সরকার (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে কথিত মাদক বিক্রির অভিযোগ তুলে জোরপূর্বক তুলে নেয় চাঁদপাই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর সুলতান হাওলাদারের ছেলে জাকির ও তার দলবল। পরে তাকে মোংলা পোর্ট পৌরসভার সিঙ্গাপুর মার্কেট এলাকায় নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে হাত পা বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে বিনোদ সরকারকে চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগরের গুচ্ছগ্রোমে বাবা’র (ইউপি মেম্বর সুলতান হাওলাদার) টর্চার সেলে আটকে রাখে মেম্বারপুত্র জাকির। সেখানে জাকিরের লাঠিয়াল বাহিনী বিনোদ সরকারকে দ্বিতীয় দফায় নির্যাতন ও মারধরসহ মাদক বেচাকেনার স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করে। এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিনদের ছোট ভাই বিপ্লব সরকার (৩৮)। এ সময় তাকেও টর্চার সেলে আটকে রেখে দুই ভাইকে উলঙ্গ করে কয়েক দফায় মারধর ও নির্যাতন চালানো বলে অভিযোগ। এ খবর জানতে পেরে স্বামী ও দেবরকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে বিনোদের স্ত্রী বিপাশাও নির্যাতনের শিকার হন। শনিবার দুপুর ১ টার দিকে লোকজন নিয়ে একই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোল্লা কামরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে বিনোদ সরকার ও তার ভাই বিপ্লব সরকারকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল দুটি পরিদর্শনসহ হাসপাতালে গিয়ে আহতদের বক্তব্য নিয়েছে। নির্যাতিতরা মোংলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে। ইউপি মেম্বার সুলতান ও তার ছেলে জাকিরের বাহিনী এলাকায় নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। মামলা হওয়ায় এবার কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল