বগুড়া অঞ্চলের জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত কাজ ধীর গতি হওয়ার কারণে আসছে ঈদে এবার যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়াবে। উন্নয়ন কাজ চলাকালীন এই সড়কটির বিভিন্ন অংশে সংকুচিত, কোথাও প্রশস্ত আবার কোথাও একমুখি। যে কারনে সড়কের বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচল করছে ধীরগতিতে। আর ধীরগতির কারণে এবার ঈদে ভোগান্তি থাকবে ঘরে ফেরা মানুষদের। ঈদের আগে সরাসরি যানবাহন চলাচল করতে পারে এমন ব্যবস্থা না করলে পথেয় নানা দুর্ভোগের শিকার হবেন যাত্রীরা।
জানা গেছে, সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রকল্প-২ এর আওতায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল ও বগুড়া হয়ে রংপুর পর্যন্ত ১৯০.৪ কিলোমিটার মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। ‘এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পে বগুড়া অংশে প্রায় ১৫শ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৩ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। চার লেনের পাশাপাশি মহাসড়কের দুই পাশে ধীর গতির যানবাহনের জন্য দুটি সংরক্ষিত লেনও থাকবে। প্রকল্পের বগুড়া অংশে রাস্তার উন্নয়নসহ ২টি সেতু, ১০টি আন্ডারপাস, ১টি রেলওয়ে ওভারপাস, কালভার্ট এবং বিভিন্ন স্থানে যাত্রী উঠানামার জন্য বাস-বে নির্মাণ করা হচ্ছে।
এদিকে নির্মাণ কাজ চলাকালীন মহাসড়কে যানবাহনগুলো বিভিন্ন স্থানে ধীরগতিতে চলাচল করছে। রাস্তার উন্নয়ন কাজে কোথাও একপাশে চলাচল করছে, আবার আন্ডারপাস ও ওভারপাস নির্মাণে রাস্তা সংকুচিত হয়ে দুপাশে যানবাহন চলাচল করছে। মাঝে মাঝেই সড়কে পরিবহনের চাপ বেড়ে গেলে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তা নির্মাণের আবর্জনা আর ধুলা বালিতে যাত্রীদের ভুগতে হচ্ছে দুর্ভোগে। স্বাভাবিক দিনেই যখন যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। সেখানে বিশেষ দিনে দুর্ভোগ বেড়ে যাবে আরো কয়েকগুণ। ঢিমে তালে কাজের জন্য আসছে ঈদে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে। ঈদ ছুটিতে ঘরমুখি মানুষের ভিড় বাড়বে এবং সেই সঙ্গে বাড়বে যানবাহনের সংখ্যাও।
গত ২ বছর করোনাকালে উৎসবের আমেজ ছিল না, তবে এবার করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়বে, আর সেই চাপ পড়বে পরিবহনে, এতে মহাসড়কে পরিবহন বেড়ে গিয়ে ভয়াবহ যানজটের আংশকা রয়েছে। মহাসড়কে নির্মাণ কাজ চলাকালীন ঈদের ছুটিতে যানজটসহ মহাসড়কে ভোগান্তির আশংকা ক্রমেই বাড়ছে। বগুড়া শহরের চারমাথা ও তিমাথা এলাকায় আন্ডারপাস ও রেললাইন ওভার পাস নির্মাণ কাজ এগিয়ে গেলেও চলছে ধীরগতিতে। এখানে নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে দুপাশে গাড়ী চলাচল করছে। এতে যানবাহনে ধীরগতি দেখা গেছে। পাশাপাশি মহাসড়কে নিষিদ্ধ থ্রি-হুইলার অবাধে চলাচল করছে, এতে দ্রুতগতির পরিবহনগুলোর গতি কমে আসছে।
পরিবহন মালিক শ্রমিকরা বলছে, এখন বগুড়া থেকে ঢাকা যেতে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা লাগে, ঈদে এমন অবস্থা থাকলে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা লাগবে, এতে ভোগান্তিতে পড়বে জনসাধারণসহ পরিবহনগুলো।
বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জানান, মহাসড়কে উন্নয়ন কাজে আমরা খুশি। তবে কাজের গতি বৃদ্ধি করে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। ঈদ যাত্রায় পরিবহন বেড়ে যায় সড়কে এতে পরিবহন ও যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হয়। এর মধ্যে ফোর লেনের উন্নয়ন কাজের জন্য কোন যাত্রী যেন দুর্ভোগে না পড়ে সে দিকে নজর দিতে হবে। আর নয়তো এবার ঈদে সরাসরি বাস চলাচল করতে পারে মহাগড়কে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে।
সাসেক-২ প্রকল্প বগুড়ার বনানী-মোকামতলা অংশ ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান, বগুড়া অংশে ইতিমধ্যেই ৪২ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, নির্ধারিত সময়েই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। তবে ঈদে জনদুর্ভোগ লাঘবে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ভেঙে যাওয়া সড়ক মেরামতসহ উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ