প্রধান শিক্ষকের সাথে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বাগবিতণ্ডার জেরে ৬ শিক্ষকসহ ৯ জনের বেতন আটকে দেওয়ার বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তবে স্কাউট ও ক্রীড়া ফি জমা না দেওয়ার কারণে ওই কর্মকর্তা শিক্ষকদের উপস্থিতির প্রতিবেদনে প্রতিস্বাক্ষর দিচ্ছেন না বলে দাবি করেছেন। প্রতিস্বাক্ষর না দেওয়ার ফলে মার্চ মাসের বেতন, বৈশাখি ও ঈদ উৎসব ভাতা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারছেন না ঢাকার ধামরাইয়ে বান্নল লাক্ষু হাজী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলা অডিটরিয়ামে অটিজম শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের বিষয় নিয়ে বান্নল লাক্ষু হাজী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল গফুরের সঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিন আশরাফির বাগবিতণ্ডা হয়। নিজের ভুল বুঝতে পেরে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ক্ষমা চাইতে যান আবদুল গফুর। কিন্তু তাকে বেয়াদব বলে কক্ষ থেকে বের করে দেন শাহিন আশরাফি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক উপস্থিতির প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করছেন না তিনি। পরে কয়েকজন শিক্ষক মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে তাদের উপস্থিতির প্রতিবেদনে প্রতিস্বাক্ষর করার জন্য পরপর দুই দিন শাহিন আশরাফিকে অনুরোধ করেন। এরপরও তিনি স্বাক্ষর করেননি। ফলে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ কর্মচারীরা বেতন-ভাতা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারছেন না।
বিদ্যালয়ের করনিক জানান, তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। প্রতিমাসে বেতন পাওয়ার পর ওষুধ কিনে দিই তাকে। কিন্তু এ মাসে এখনো হয়নি। তাই ওষুধ কিনে দিতে পারিনি। এ ছাড়া সামনে ঈদ, বেতন না দিলে চলব কীভাবে?'
এর আগে চলতি মাসের ১২ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী পদাধিকার বলে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন শিটে স্বাক্ষর দেন। কিন্তু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিক্ষক উপস্থিতি প্রতিবেদনে প্রতিস্বাক্ষর দেননি।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিন আশরাফি বলেন, ‘বাগবিতণ্ডার জেরে নয় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একজন খারাপ প্রকৃতির লোক। তিনি স্কাউট ফি ও ক্রীড়া ফি জমা দেননি। তাই শিক্ষক উপস্থিতি প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করিনি।’
স্কাউট ও ক্রীড়া ফির সঙ্গে বেতন প্রদানের কোনো সম্পর্ক আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেতন আটকে না দিলে কেউ ফি জমা দিতে চান না।’
তবে জানা গেছে, বান্নল লাক্ষু হাজী উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কাউট ও ক্রীড়া ফি প্রতিমাসে জমা দেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা