২৭ মে, ২০২২ ১৭:১৫

ধানের দাম ভালো, তবুও কেন সন্তুষ্ট হতে পারছেন না ঝিনাইদহের কৃষকরা?

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ধানের দাম ভালো, তবুও কেন সন্তুষ্ট হতে পারছেন না ঝিনাইদহের কৃষকরা?

হাট-বাজারে ধানের দাম ভালো, তবে লাভ নেই কৃষকের। কারণ একটাই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টির কারণে ধানের মান নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বোরো ধান বাজারে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষদেকর।

সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার তেতুলতলা, হাটগোপালপুর, শৈলকূপার ভাটই বাজার হাটে গিয়ে দেখা যায় হাটজুড়ে শুধু ধান আর ধান। কৃষক তার নতুন ধান নিয়ে এসেছেন হাটে বিক্রি করতে। অধিকাংশের মুখে হাসি নেই। হাট ঘুরে দেখা গেছে একই ধান বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। যেসব ধানের মান ভালো তার দাম এক হাজার টাকার উপরে মণ বিক্রি হচ্ছে। আবার একই জাতের ধান বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে ৯শ থেকে ৯৫০ টাকায়। আর একেবারেই মান কম এমন ধান বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মিনিকেট হিসেবে পরিচিত সরু ধান (ভালো মানের) প্রতি মণ ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার একই ধান যেগুলো বৃষ্টিতে কিছুটা রং নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলো ৪০০ থেকে ৯৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। একই অবস্থা ছিলো ব্রি-২৮ ধানের ক্ষেত্রেও। এই জাতের ধান ৮৫০ থেকে ১১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে বৃষ্টিতে নষ্ট অনেক নিম্নমানের ধান বিক্রিও করতে পারছেন না চাষিরা।

ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক আতিয়ার জানান, ক্রেতারা খুব হিসেব করে ধান কিনছেন। যারা বৃষ্টির আগে ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছেন তারা ধানের দাম বেশি পাচ্ছেন। আর আমাদের মতো যে সব চাষি আছেন যারা বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কপাল পুড়েছে।

সোমনাথ বিশ্বাস নামে আরেক কৃষক জানান, দুই সপ্তাহ আগেও এই বাজারে ধান বিক্রির সময় ক্রেতাদের এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়নি। বর্তমানে আমরা বাজারে ধান এনে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছি। আড়ৎদার ও মিলাররা ধানের মান একটু নিম্ন হলেই তা আর নিতে চাচ্ছেন না। আর নিলেও তা কম দাম দিচ্ছে। তিনি বলেন, বাজারে ধানের দাম ভালো হলেও আমাদের কোন লাভ হচ্ছে না। কারণ বৃষ্টিতে ধান ক্ষেতে ডুবে রং নষ্ট হয়ে গেছে। এসব ধান নানা অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা কম দামে ধান কিনে নিচ্ছেন।

আড়ৎদার রতন কুমার দে জানান, এবার ধান নিয়ে আমরা সত্যিই বড় সমস্যায় আছি। কারণ বাজারে ধানের মধ্যে কোনটি ভালো কোনটি খারাপ যাচাই করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা মূলত ধান কিনে বিভিন্ন মিলে দিয়ে চাল তৈরি করি। ধানের মান যদি ভালো না হয় তাহলে চালের মানও কমে যায়। এসব কারণেই ধানের মান নির্নয় করে কিনতে হচ্ছে আমাদের। এতে অনেক চাষি আমাদের উপর ক্ষুব্ধ হলেও কিছু বলার থাকছে না।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ছয় উপজেলায় ৮৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এ বছর উপযুক্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে শেষ সময়ে অশনির কারণে ধান নিয়ে কৃষকরা একটু বিপত্তিতে পড়েছেন।


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল রানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর