কবিরাজ বলেছিলেন, ‘যৌবন ফিরে পেতে যে কোনো একজন পুরুষের গোপনাঙ্গ, অণ্ডকোষ ও চোখ প্রয়োজন। সেই থেকেই সুযোগ খুঁজছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানা এলাকার হানিফ মালিথার ছেলে লিটন মালিথা (৪০)। গত ২৯ মে রাতে সেই সুযোগ পেয়েও যান। নিজের সহকর্মী ধানকাটা শ্রমিক নকিম উদ্দিনকে হত্যা করে সেগুলো সংগ্রহ করে লিটন।’
গত ২৬ মে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের বেনজীর আহমেদের বাড়িতে ধানকাটা শ্রমিক হিসেবে কাজে যান অভিযুক্ত লিটন মালিথা ও নিহত নকিম উদ্দিনসহ তিনজন। ২৯ মে একজন শ্রমিক বিদায় নেন, লিটন ও নকিম থেকে যান। ৩০ মে সকালে বাড়ির মালিক সকালের নাস্তার জন্য লিটন ও নকিমকে তাদের ঘরে ডাকতে গিয়ে নকিমকে মৃত অবস্থায় পান। কিন্তু লিটন মালিথা সেখানে ছিলেন না।
দেখা যায়, নকিমের গোপনাঙ্গ ও অণ্ডকোষ কেটে এবং চোখ উপড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বাঘারপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। রহস্যজনক এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্তে নামে যশোরের ডিবি পুলিশ। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, ‘কয়েকদিনের তদন্ত শেষে পুলিশ চুয়াডাঙ্গা ও মানিকগঞ্জ জেলায় অভিযান চালিয়ে লিটন মালিথা ও আব্দুল বারেক নামে দু’জনকে আটক করতে সমর্থ হয়। এরপরই রহস্যের জট খুলে যায়।’
লিটন মালিথা সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি দীর্ঘদিন ধরে যৌনরোগে ভুগছিলেন। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি লেগেই থাকে। এক পর্যায়ে স্থানীয় কবিরাজ আব্দুল বারেকের শরণাপন্ন হলে কবিরাজ তাকে অনন্ত যৌবন ফিরে পেতে যে কোন একজনের পুরুষের গোপনাঙ্গ, অণ্ডকোষ ও একটি চোখ সংগ্রহের কথা বলেন। সেই থেকেই তিনি সুযোগ খুঁজছিলেন। ঘটনার দিন একজন শ্রমিক বিদায় নিলে ওই বাড়িতে তারা দু’জন শ্রমিকই ছিলেন। রাতে সেই সুযোগ কাজে লাগান তিনি।’
তিনি আরও জানান, ‘তান্ত্রিক কবিরাজ আব্দুল বারেক যৌবন ফিরিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে একাধিকবার সমকামিতায় লিপ্ত হন। এরপর থেকে কবিরাজ বারেকের নির্দেশে লিটন বিভিন্ন পুরুষ ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে বিশেষ অঙ্গ ও চোখের মণি সংগ্রহের চেষ্টা করতে থাকে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার লিটন মালিথার কাছ থেকে নিহত নকিম উদ্দিনের গোপনাঙ্গ, অণ্ডকোষ ও একটি চোখ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কবিরাজ আব্দুল বারেক ও ধানকাটা শ্রমিক লিটন মালিথা গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক