নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি ও খুটামারা ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা একটি কাঠের সেতু এখন অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
চারালকাটা নদীর উপর বাঁশ ও সিমেন্টের খুঁটির ওপর নির্মিত প্রায় ১৪০ মিটার দীর্ঘ এই কাঠের সেতুটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারী যানবাহন তো দূরের কথা, রিকশা, সাইকেল এমনকি মোটরসাইকেল নিয়েও পথচারীদের হেঁটে পার হতে হচ্ছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে পড়তে পারে।
শিমুলবাড়ির ঘুঘুমারী ও খুটামারার হরিশচন্দ্র পাঠ গ্রামকে বিভক্ত করেছে চারালকাটা নদী। বহু বছর ধরে ওই স্থানে একটি পাকা সেতুর দাবিতে এলাকাবাসী বিভিন্ন মহলে ধর্না দিলেও কাজ হয়নি। শেষমেশ নিজস্ব উদ্যোগে স্থানীয়রা কাঠের এই সেতুটি নির্মাণ করেন।
উত্তরে শিমুলবাড়ি, রাজবাড়ি, ডিয়াবাড়ি, ঘুঘুমারী, বালাপুকুর, মীরগঞ্জ হাট ও জলঢাকা উপজেলা সদরসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সঙ্গে এই সেতুর মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন হয়। দক্ষিণে রয়েছে হরিশচন্দ্র পাঠ, রামগঞ্জ, টুপামারী এবং জেলা সদরের লক্ষীচাপ। শিমুলবাড়ি থেকে জেলা সদরে যাওয়ার এই পথটি মাত্র ১৫ কিলোমিটার হলেও, বিকল্প পথ ধরে ঘুরে যেতে হলে প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। এতে সময় ও খরচ- দুটিই বাড়ছে। কৃষকদেরও ক্ষেতের ফসল তুলতে দীর্ঘপথ ঘুরে আসতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আজিজার রহমান বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর ধরে এই নদীর উপর কোনো পাকা সেতু হয়নি। এতে আমরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছি। এখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।’
ঘুঘুমারী গ্রামের ইয়াকুব আলী জানান, বর্ষাকালে নদীর পানি সেতুর উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে সেতুর কাঠের অংশ ভেঙে যায়, পরে স্থানীয়রা আবার মেরামত করেন। তিনি বলেন, ‘এখন সেতুর অনেক অংশই ভেঙে গেছে, চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’
রামনগর গ্রামের আফজালুল হক জানান, ‘সেতুটি এক পাশে হেলে পড়েছে। এতে চরম ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। একটি পাকা সেতু হলে যাতায়াত সহজ হবে এবং সময়ও বাঁচবে।’
খুটামারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এটি স্থানীয়দের নিজ উদ্যোগে নির্মিত একটি কাঠের সেতু। কিন্তু এখন এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এলাকার মানুষকে প্রায় ২০ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে, যা খুবই কষ্টদায়ক।’
জলঢাকা উপজেলা প্রকৌশলী মো. তারিকুজ্জামান বলেন, ‘শিমুলবাড়ি ও খুটামারা ইউনিয়নের মধ্যে চারালকাটা নদীর উপর অবস্থিত ১৪০ মিটার দীর্ঘ কাঠের সেতুটি সম্পর্কে তথ্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ