মাগুরায় পুলিশের এডিসি লাবণী আক্তার ও কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান আকাশের আত্মহত্যার কোন ক্লু এখনো পায়নি পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুই পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়েছে।
খন্দকার লাবণী আক্তারের আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্ত ভার দেয়া হয়েছে মাগুরার শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক নিলুফার ইয়াসমিনকে। অন্যদিকে কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের আত্মহননের ঘটনায় তদন্তভার দেয়া হয়েছে মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, অপারেশন) শেখ সাইফুল ইসলামকে।
দুই জনই বৃহস্পতিবার তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। তবে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে লাবণী আক্তার ও তার সাবেক দেহরক্ষী মাহমুদুলের এই আত্মহননের নেপথ্যে কী, তার উল্লেখযোগ্য তথ্য প্রমাণ তারা এখনো পাননি বলে জানিয়েছেন।
মাগুরার শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি তদন্ত কাজ শুরু করেছি। নিহতের পরিবারের সবাই শোকে মর্মাহত। এটি আত্মহত্যা সে বিষয়টি নিশ্চিত। তবে কেন খন্দকার লাবণী আক্তার আত্মহনেনর পথ বেছে নিলেন তদন্ত কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেটি বলা সম্ভব নয়।’
খন্দকার লাবণী আক্তারের পিতা শফিকুল আজম তার মেয়ের আত্মহত্যার নেপথ্যে দাম্পত্য কলহকেই দায়ী করেছেন। ওই দিন সন্ধ্যায় জানাযার নামাজ শেষে তাদের গ্রামের বাড়ি বরালিদহ গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের আত্মহত্যার তদন্তে নিয়োজিত কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, অপারেশন) শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। এখনো উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায় নি।’
মাহমুদুল হাসানের বিষয়ে মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ময়না তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাহমুদুলের লাশ তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের বাবা চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সদস্য এজাজুল হক খান জানান, দুই বছর চার মাস আগে তার ছেলে পুলিশে যোগ দেয়। মাগুরায় আসার আগে সে খুলনা মেট্রোপলিটনে কর্মরত ছিল। বুধবার রাত ১০ দিকে মোবাইলে সর্বশেষ তার ছেলের সাথে কথা হয়। মাহমুদুল জানিয়েছিল যশোর রোডে ডিউটিতে আছে। এসময় তার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথা হয়। তার কথায় অস্বাভাবিক কোন কিছু ছিলো না। তাকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার সময় জানাযা শেষে আমাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিপুলবাড়ি গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার মধ্যরাতে শ্রীপুরের সারঙ্গদিয়ায় গ্রামে নানা বাড়িতে গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার লাবণী আক্তার (৪০)। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন রেঞ্জে ডিবি পুলিশের এডিসি হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তার বাবার বাড়ি শ্রীপুর উপজেলার বরালিদহ গ্রামে। তবে সারঙ্গদিয়ার নানা মৃত কুদ্দুস মাস্টারের বাড়িতেই তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। লাবণীর শ্বশুর বাড়ি মাগুরা জেলার হাজিপুর গ্রামে। স্বামী তারিক আব্দুল্লাহ ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে ভারতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে খুলনাতে কর্মরত রয়েছেন।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬ টার মাগুরা পুলিশ লাইন্স ব্যারাকের ছাদ থেকে কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের(২৩) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দেড় মাস আগে খুলনা থেকে বদলি হয়ে মাগুরা আসেন মাহমুদুল হাসান। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিপুলবাড়িয়া গ্রামে। তবে বসবাস কুষ্টিয়ার নতুন কমলাপুরে। কনস্টবেল মাহমুদুল এক সময় খুলনায় চাকরি করার সময় লাবণী আক্তারের দেহরক্ষী ছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তা লাবণী আক্তারের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল