বান্দরবানে পরিকল্পিতভাবে এক ব্যক্তিকে খুনের দায়ে হ্লাচিং মং মারমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। বান্দরবানের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবু হানিফ বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকেলে তার এজলাসে এ রায় দেন। বান্দরবানের বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট ইকবাল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রায়ে আসামী হ্লাচিং মং মারমাকে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। একই রায়ে তাকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। এ রায় ঘোষণার ৭ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য আসামিকে সুযোগ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি হ্লাচিং মং মারমা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে তার পক্ষের কোনো আইনজীবী এসময় উপস্থিত ছিলেন না।
রায়ে বলা হয়, আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী, পুলিশ রিপোর্ট এবং আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবে খুনের ঘটনাটি নিরঙ্কুশভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সর্বোচ্চ সাজা বা মৃত্যু দেয়া ছাড়া ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে না- এই বিবেচনায় বাংলাদেশ দন্ডবিধির ১৮৬০ এর ৩০২/৩৪ ধারায় এবং অস্ত্র আইনে আসামিকে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদন্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
রুমা থানায় দায়ের করা মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের উজানী পাড়ায় নিজ বাড়ির কাছাকাছি একটি জুম ক্ষেত থেকে নুশৈ মং মারমার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই মংশৈ মারমা বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে রুমা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর ভিত্তিতে একই দিন পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করে এবং ৩ জনকে গ্রেফতার করে বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠায়। পরে বিচারের জন্য মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।
দীর্ঘ শুনানী ও ১৫ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণের পর বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবু হানিফ। মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট তপন দাশ এবং আসামি পক্ষে এডভোকেট কৌশিক দত্ত শুনানী করেন। রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামি পক্ষের আইনজীবী কৌশিক দত্ত আদালতে উপস্থিত না থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ