১৯ আগস্ট, ২০২২ ২০:২০

পঞ্চগড়ের দুই হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও নেই চালক

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের দুই হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও নেই চালক

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া এবং দেবীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ জনগোষ্ঠীর জন্য দুটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও নেই চালক। এ দুটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের প্রত্যেকটিতে দুটি করে অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। দুটি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য একজন চালক ছিলেন। গত তিন বছর আগে দেবীগঞ্জ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের চালক মৃত্যুবরণ করেন। গত জুন মাসে অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসাধিন অবস্থায় জুলাই মাসে মারা যান তেঁতুলিয়া হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক। বর্তমানে এই দুই হাসপাতালের ৪ টি অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বরে পরে আছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। 

রোগী ও রোগীর স্বজনরা বলছেন, হাসপাতালে এসে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পাচ্ছেন না তারা। এতে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। 

তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, এ হাসপাতালে রয়েছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স। স্বাস্থ্যসেবার গতিশীলতায় ২০২১ সালে আগস্ট মাসে এ হাসপাতালটিতে নতুন অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালক না থাকার কারণে বিকল্প ব্যবস্থায় কয়েকগুন বেশি টাকায় রোগী নিয়ে যেতে হয়। তারা বলছেন, এমনিতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে জেলা পর্যন্ত ১ হাজার টাকা খরচ হতো, এখন বাইরে থেকে যেকোন পরিবহন নিলে ২ হাজার পর্যন্ত খরচ হয়ে যায়। 

এই দুটি হাসপাতালে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা হলে প্রথমত পঞ্চগড়ে আধুনিক সদর হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে এখান থেকে রেফার্ড হলে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও রংপুরে সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। এ জন্য রেফার্ড হওয়া রোগীদের নিতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস নিয়ে যেতে হয়। আর এর জন্য বিপদে পড়ে বেশি টাকা দিয়েই উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়মিত রোগী পরিবহন করেন রোগীর স্বজনরা।

মমিনপাড়া এলাকার আজাদ হোসেন জানান, পনের দিন আগে আমার ভাই দুর্ঘটনার শিকার হলে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যাই। রোগীর সমস্যা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করলে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক না থাকায় বেশি টাকা দিয়ে মাইক্রোবাস নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে যেতে হয়। এতে টাকা বেশি লাগলেও মাইক্রো ম্যানেজ করতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায় গত তিন বছর আগে এই স্বাস্থ্য কম্পেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মারা যান। এখনো নতুন চালক নিয়োগ দেয়া হয়নি। 

দেবীগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিতু আক্তার জানান, উপজেলার ৩ লাখ মানুষের জন্য ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের সেবা থেকে দীর্ঘদিন থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। ফলে তারা চিকিৎসা সেবায় দুর্ভোগে আছেন। তিনি অবিলম্বে এই হাসপাতালে দুইজন অ্যাম্বুলেন্স চালক নিয়োগের দাবি জানান। 

জেলা সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল হাসান জানান, তেঁতুলিয়ায় এবং দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স চালক পদটি শূন্য রয়েছে ।  বিষয়টি স্বাস্থ্য দপ্তরে জানানো হয়েছে। বিধি মোতাবেক দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স চালক নিয়োগ করা হবে বলে তিনি জানান।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর