মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাধাগোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিরাজ শরিফ নামের এক সহকারি শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান ও তার আত্মীয়র বিরুদ্ধে।
আজ বুধবার সকাল ১১ টায় বিদ্যালয় মাঠে এমন ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষক গাড়াবাড়িয়া গ্রামের মৃত নজিবর রহমানের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাহাজাহান রেজা বলেন, দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা জানান, গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাসে অংক না পারায় রাজ, রাসেলসহ বশে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ডাস্টার দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করা হয়। এমন ঘটনা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানতে পেরে বিদ্যালয়ে আসেন। সে সময় প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে না পেয়ে সহকারি শিক্ষকদের কাছে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। পরে সহকারি শিক্ষকরা আহত শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে অভিভাকদের শান্ত করেন। এ ঘটনার সূত্র ধরে আজ বুধবার সকালে শিক্ষক মিরাজ শরিফ বিদ্যালয়ে আসলে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান রাগান্বিত হয়ে তাদের আত্মীয় স্বজনদের খবর দিয়ে বিদ্যালয়ে ডেকে আনেন। হাবিবুর রহমান, তার ভাই জমজম ও ভাগ্নে পিপুল বিদ্যালয়ে ছুটে এসে মিরাজ শরিফকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে অন্য সহকর্মীরা মিরাজ শরিফকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মিরাজ শরিফ জানান, এর আগে প্রধান শিক্ষক ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের গালিগালাজের কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। আমরা কষ্ট করে হোম ভিজিটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আনার চেষ্টা করি। এই নিয়ে মাঝে মধ্যে প্রধান শিক্ষক আমাদের ওপর রাগান্বিত হন এবং মারমুখি আচরণ করেন। এ আক্রোশের কারণেই আজকে সকালে আমাকে পিটিয়ে আহত করেছে। এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার দাবি করেছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, আমি বিদ্যলয় থেকে বদলি নিতে চেয়ে শিক্ষা অফিসে দরখাস্ত করেছি। আজকে আমার ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেলে একটি অনাকাংখিত ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনো শিক্ষার্থীদের মারধর করিনি। আমার বিরুদ্ধে কোনো শিক্ষার্থীর অভিযোগ নেই। অভিভাবকরা যদি আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করতে পারেন তবে আমি স্বেচ্ছায় বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাব।
গাংনী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাহাজাহান রেজা জানান, আহত শিক্ষক মিরাজ শরিফ অভিযোগ করেছেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হবে। তিনিই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল