ঝালকাঠির রাজাপুরে জাল টাকার নোট দিয়ে ঋণ পরিশোধ করার অভিযোগে এক নারীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার অভিযুক্ত বিউটি মিস্ত্রিকে আদালতে সোপর্দ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের নৈকাঠি এলাকার সুবর্না হালদারের পাওনা টাকা পরিশোধ করেন বিউটি মিস্ত্রি। পরে সুবর্না ওই টাকা নিয়ে দোকানে মালামাল কিনতে গেলে দোকানদার তাকে জাল টাকা বলে ৫০০ টাকার একটি নোট ফিরিয়ে দেয়। এরপরে সুবর্না বিউটি মিস্ত্রির নিকট জাল টাকা দেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে তা ফিরিয়ে দিয়ে আসল নোট দেওয়ার দাবি জানান। এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হলে তাদের দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বুধবার পাওনাদার সুবর্না হালদার বাদী হয়ে বিউটি মিস্ত্রিকে আসামি করে রাজাপুর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করে। পরে আদালত বিউটি মিস্ত্রিকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
সুবর্না হালদার জানায়, নৈকাঠি এলাকার পূর্বপরিচিত ননী হালদারের স্ত্রী সুবর্নার কাছ থেকে একই এলাকার সরকারি আবাসনের জয়ন্ত মিস্ত্রীর স্ত্রী বিউটি পাঁচ মাস আগে ১৭ হাজার টাকা ধার নেয়। ১৫ দিন আগে বিউটি তার দেনার টাকা শোধ করতে এসে সবগুলো ৫০০ টাকার নতুন নোট প্রদান করেন। সে টাকা রেখে দিলে পুনরায় বিউটি নতুন ৫০০ টাকার নোটের ৫ হাজার টাকা দিয়ে সুবর্নার কাছ থেকে পুরাতন নোটের ৫ হাজার টাকা পাল্টে নেয়।
গত ৫ সেপ্টেম্বর সোমবার ওই টাকা থেকে সুবর্না পাঁচশত টাকার একটি নোট নিয়ে মালামাল কিনতে গেলে দোকানদার নোটটি জাল সন্দেহ করে সুবর্নাকে ফিরিয়ে দেয়। তখন সে ছুটে বাড়িতে এসে বিউটির দেওয়া বাকি ২১ হাজার পাঁচশত টাকা বেড় করে সবগুলো টাকার নোটই জাল বলে নিশ্চিত হয়।
মঙ্গলবার সুবর্না জাল নোটগুলো নিয়ে বিউটির কাছে গিয়ে নোটগুলো সে কোথায় পেয়েছে জানতে চায়। এতে বিউটি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ও সে এই নোটগুলো দেয়ার কথা অস্বীকার করে। একপর্যায়ে সে রাজাপুর থানায় এসে সুবর্নার নামে জাল টাকা দিয়ে তাকে ফাঁসানোর অভিযোগ দেন। সুবর্না রাজাপুর থানায় বিউটির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ উভয় অভিযোগ প্রাথমিক তদন্ত করে।
এসময় স্থানীয়রা জানায়, বিউটি মিস্ত্রি এর আগেও ইসলামি ব্যাংকে ঋণ পরিশোধ করতে জাল টাকা প্রদান করে ধরা পড়েছিল। বিউটি জানায়, ওই টাকাগুলো সে পাশের কাউখালী উপজেলার রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও থেকে ঋণ হিসেবে এনেছে।
এ বিষয়ে পুলিশ রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ব্যবস্থাপক মো. জুয়েল তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে সে বলেন, আমরা ব্যাংকে চেকের মাধ্যমে গ্রাহকদের ঋণ অর্থ দেই, কোনো নগদ টাকা দেই না।
এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. মোস্তফা জানান, দুজনকেই থানা হেফাজতে রেখে প্রাথমিক তদন্তের পর সুবর্না হালদারকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর সুবর্না হালদার বাদী হয়ে বিউটির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করলে তাকে ওই মামলায় আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই