নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় পটুয়াখালীর বাউফলের নাজিরপুর তাঁতেরকাঠি ইউনিয়নে এক সংবাদিক, দুইটি আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ নৌকার সমর্থকদের ২৫টি ঘর-বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ঘটনা ঘটেছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নৌকার সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ ঘটনায় ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নৌকার ৫ শতাধিক কর্মী-সর্মথক। মঙ্গলবার নির্বাচন পরবর্তী রাতভর নাজিরপুর তাঁতেরকাঠি ইউপি উপ-নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এসএম মহসিনের সমর্থকেরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মঙ্গলবার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠি ইউপি উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬৫ ভোটে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. ইব্রাহিম ফারুককে হারিয়ে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (চশমা) এসএম মহসিন। মঙ্গলবার রাতে ফলাফল ঘোষণার পর থেকে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে তান্ডব শুরু করে।
তান্ডব চালিয়ে বাউফল প্রেস ক্লাবের সদস্য সাংবাদিক জিএম ফোরকানের বসতঘর, বড় ডালিমা ও ছয়হিস্যা আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মো. ফরাদ গাজী, ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য আনসার উদ্দিন খান, ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি রিয়াদুল ইসলাম বাবু, কচুয়া গ্রামের জসিম খান, বড় ডালিমা গ্রামের আবদুল্লাহ, জামাল সরদার, স্বপন সরদার, কাশেম গোলদার, ইয়ার হোসেন, মাহফুজ, রামনগর গ্রামের দুলাল মৃধা, মামুন মৃধা, ছয়হিস্যা গ্রামের রাজ্জাক মাস্টার, মালা, বারেক গাজী, লুৎফার মাস্টার, নিদমী গ্রামের শহিদ হাওলাদার, রিয়াজ ব্যাপারী, হানিফ সরদার, নিজ তাঁতেরকাঠি গ্রামের মোতালেব, ইউসুফ সরদারের ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
এছাড়াও নৌকার সমর্থক রামনগন বাজারে মামুন মৃধা, কামাল হোসেন হাওলাদার, বাকলা বাজারে মাহবুব, শহিদুল ইসলাম, নিমদীর নজরুল তালুকদার, ধানদী বাজারের মহসিন মৃধা, ছয়হিস্যা বাজারের বাচ্চু মোল্লা ও বৌ বাজারের জলিল সরদারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকেরা।
সরেজিমনে দেখা যায়, নাজিরপুর ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. আনসার উদ্দিন খানের বাড়িতে ব্যাপক তান্ডব চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় ঘরের আসবাবপত্র। কোপানো হয় ঘরের চারপাশের টিনের বেড়া। তান্ডব থেকে রেহাই পাইনি ওই আওয়ামী লীগ নেতার রান্না ঘরের হাড়ি পাতিলও।
বাউফল প্রেস ক্লাবের সদস্য সাংবাদিক জিএম ফোরকান বলেন, নজিরবিহীন হামলা চালানো হয়েছে আমার বাড়িতে। চশমা প্রার্থীর সমর্থক, ব্যাপারী পরিবারের লোকজন ও সন্ত্রাসীদের তান্ডবে তছনছ হয়ে গেছে আমার বসত ঘর।
কচুয়া গ্রামের বাসিন্দা ও ৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি রিয়াদুল ইসলাম বাবু বলেন, আমার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে যেতে পারছি না।
এ বিষয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম মহসিনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আল মামুন বলেন, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ