নাটোরে নেশা জাতীয় পানীয় পান করিয়ে অচেতন অবস্থায় এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার দায়ে চার তরুণকে ১০ বছর আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নাটোরের শিশু আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। অভিযুক্ত চার তরুণের উপস্থিতিতে রায় পড়ে শোনানো হয়।
রায় ঘোষণার সময় আদালত জানান, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। শিশু আইনের বিধান অনুসারে এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর করে আটকাদেশ দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সাথে সাথে অভিযুক্তদের সাথে থাকা তাদের অভিভাবকরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে অভিযুক্তদের পুলিশ পাহারায় সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেঞ্চ সহকারী আব্দুস সোবহান আটকাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই মামলার অপরাধ সংঘটনের সময় অভিযুক্তরা অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। তাই তাদের শিশু আইনে বিচার সম্পন্ন হয়েছে। তবে বর্তমানে সবাই প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ জুলাই দুপুর দেড়টায় এক সহপাঠী বান্ধবী ভুক্তভোগী তরুণীকে নেশা জাতীয় পানীয় পান করান। এতে তিনি অচেতন হলে তাকে সিএনজি যোগে অপহরণ করে অজ্ঞাত এক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রসহ তিন তরুণ তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। তাদের সাথে থাকা এক বান্ধবী ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। জ্ঞান ফেরার পর তাকে সিএনজিযোগে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে বাগাতিপাড়া থানায় চারজনকে অভিযুক্ত করে ধর্ষণের মামলা করেন। তদন্ত শেষে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স্বপন কুমার চৌধুরী অভিযুক্তদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। বাদী এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দরখাস্ত দেন। শুনানি শেষে আদালত পুলিশের প্রতিবেদন অগ্রাহ্য করে অভিযোগ আমলে গ্রহণ করেন। পরে বাদী পক্ষ থেকে ঘটনার সমর্থনে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার অভিযুক্তদের শিশু আইনে ১০ বছর আটকাদেশ দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি (এসপিপি) আনিছুর রহমান বলেন, শিশু আইনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর আটকাদেশ। আদালত সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ায় তার বাদী সন্তুষ্ট হয়েছেন। তবে আসামিদের আইনজীবী লোকমান হোসেন জানান, তার মক্কেল রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই