যাদের কারণে কোটি টাকা আয় হয় পর্যটন রাজস্ব খাতে। তাদের জন্য নেই কোন সুব্যবস্থা। নেই কোন আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র। আছে শুধু বহু বছর আগে কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্মিত একমাত্র ঝুলন্ত সেতু। তাও আবার জরাজীর্ণ।
বলছি, রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের কথা। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টদের উদাসিনতায় এখনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি রাঙামাটি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, রূপ আর বৈচিত্রের কমতি নেই রাঙামাটিতে। আর পাহাড় পর্যটকদের কাছে অনেকটা রূপ কথার গল্পের মতোই। তাই তো প্রায় প্রতিদিনই পর্যটকমুখর থাকে এ পাহাড়িজনপথ। পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সবচেয়ে আকর্ষণ থাকে রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের বিনোদন কেন্দ্রে। কিন্তু নাম মাত্র পর্যটন কেন্দ্র থাকলেও আধুনিকতার ছোয়া লাগেনি একেবারে। তবে রয়েছে জরাজীর্ণ একটি মাত্র ঝুলন্ত সেতু। যেখান থেকে প্রতিবছর বছর পর্যটনের রাজস্ব খাতে আয় হয় প্রায় কোটি টাকা।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. হাবিবুর রহমান জানান, পর্যটন এলাকায় প্রবেশ করলেই পর্যটকদের গুনতে হয় অর্থ। পার্কিংয়ের জন্য টাকা। ঝুলন্ত সেতু দেখতেও দিতে হয় টাকা। শুধু কি তাই ১৫ টাকার পানির বোতল ২০ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হয়। এছাড়া নাম মাত্র পার্ক বসার কোন স্থান নেই। বাচ্চাদের খেলার কোন গেমজুন নেই। দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকদের টয়লেটেরও কোন ব্যবস্থা নেই। তবুও হাজার হাজার টাকার অর্থগুনতে হচ্ছে পর্যটকদের।
তবে পর্যটকদের চাহিদা পূর্ণে তেমন কোন পরিকল্পনার কথা না জানালেও এ দায় নিতে নারাজ রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া।
তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ চাইলে পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঢেলে সাজাতে পারে। এখানে আছে অপার সম্ভাবনা। পাহাড়, গিরিখাদ, ঝর্ণা আর আকর্ষণীয় কাপ্তাই হ্রদ। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সে হোটেল মটেল থাকলেও আধুনিক বিনোদন পার্ক এখনো গড়ে উঠেনি কথা কিন্তু সত্য। তবে গেল দু’বছর করোনার কারণে এখানে উন্নয়নের কাজ শুরু করা যায়নি। তবে এ বছর পর্যটন মটেল সংষ্কারে পরিকল্পনা রয়েছে।
জানা গেছে, রাঙামাটিতে রয়েছে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র। সুবলং ঝর্ণা, পর্যটন ঝুলন্ত সেতু, আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক, ফুরামন পাহাড়, প্যাদা টিং টিং, রাঙামাটি পার্ক, শহীদ মিনার চত্বর, ডিসি বাংলো পার্ক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর যাদুঘর অন্যতম। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় জৌলুস হারাছে এসব কেন্দ্র। তবে প্রকৃতি যেন নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে রাঙামাটিতে। নয়নাভিরাম দৃশ্যপট, ঝর্ণা, গিরিখাদ, আর আঁকাবাঁকা নদী। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, কিংবা বসন্তে এ পাহাড়ে রূপের জৌলুস থাকে সারা বছরই। তবে পার্থক্য কেবল ঋতুর সাজে। শরতে পাহাড় যেন থাকে পূর্ণ যৌবনে। নীল আকাশের মেঘের ভেলায় ভাসতে থাকে পাহাড়। সারাদিন চলে নীল, সাদা ও সবুজের লুকোচুরি খেলা। সন্ধ্যার আকাশে গোধূলীর রঙ ছড়াতেই ঝাঁক বেঁধে আসে বনের পাখিরা। এখানকার প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে আছে অদেখা ভুবন। যার আকর্ষণে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরাও ছুটে আসে পাহাড়ে।
অন্যদিকে, রাঙামাটি জেলা পরিষদের কাছে পর্যটন খাত হস্তান্তরিত বিভাগ হওয়ায় প্রাকৃতিক বৈচিত্রের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে বলছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধুরী।
তিনি বলেন, পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে খুব দ্রুত আধুনিকায়ন করা হবে রাঙামাটির বিশেষ পর্যঠন স্পটগুলো।
স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলো উন্নয়ন করা না হলে খুব শিগগিরই পর্যটক আগাম হ্রাস পাবে রাঙামাটিতে দেখা যাচ্ছে এমন শঙ্কা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন