রাঙামাটিতে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে কাপ্তাই হ্রদের কচুরিপানা। কচুরিপানার জঞ্জালের কারণে হুমকিতে পড়েছে মৎস্য উৎপাদন। এতে বিপাকে পড়েছে মৎস্য ব্যবসায়ীরা। ভোগান্তিতে জেলেরাও। একই সাথে ব্যাহত হচ্ছে রাঙামাটির ৬টি উপজেলার নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদজুড়ে কচুরিপানার জঞ্জাল। হ্রদে ভেসে বেড়াচ্ছে এসব কচুরিপানা। কচুরিপানায় আটকা পড়ছে নৌযান। ঘটছে দুর্ঘটনাও। একই সাথে জেলেদের জালও নষ্ট হচ্ছে কচুরিপানায়। এছাড়া রাঙামাটি জেলার বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়ি উপজেলার যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম লঞ্চ কিংবা কান্ট্রি বোট। কিন্তু সম্প্রতি কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানার জঞ্জালের কারণে এসব নৌ রুটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে লঞ্চ ও বোট চলাচল। কচুরিপানায় আটকা পড়ে বিকল হচ্ছে লঞ্চের ইঞ্জিন।
চক্রপাড়া এলাকার শিক্ষার্থী বৈসাখী চাকমা জানায়, প্রতিদিন নৌকায় বা বোটে করে নদীপাড় হয়ে কলেজে যেতে হয়। কিন্তু কচুরিপানায় আটকা পড়ে অনেক সময় সঠিক সময় কলেজে পৌঁছাতে পারি না। শুধু তাই নয়, কাট বাজারেও যেতে নৌকায় অনেক কষ্ট হয়। কচুরিপানা এখন আমাদের মরার উপর খড়ার ঘাঁ হয়ে গেছে।
রাঙামাটি লঞ্চ মালিক মো. নাজিম আহমেদ জানায়, লংগদু, বরকল, জুরাছড়ি ও বাঘাইছড়ি নৌ রুটের বেহাল অবস্থা। লঞ্চ চলাচল হুমকিতে পড়েছে। প্রায় সময় মাঝ নদীতে কচুরিপনার কারণে ইঞ্জিন বিকল হচ্ছে। আর স্পিড বোটগুলোর ইঞ্জিন নষ্ট হলেও নদীতে ডুবে যায়। কাপ্তাই হ্রদের কচুরিপানা অপসারণ করা না হলে এ সমস্যা আরও বড় আকার ধারণ করবে।
অন্যদিকে, কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়া কমছে রাজস্ব আয়ও। ভরা মৌসুমে মাছ না পেয়ে লাভের চেয়ে লোকসান গুণছে মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
রাঙামাটি ফিসারি ঘাটের মৎস্য উন্নয়ন অধিদপ্তর ও বিপণি কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. লে. কমান্ডার মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, মৎস্য উৎপাদনের বড় বাধা এসব কচুরিপানা। এ সমস্য নতুন নয় দীর্ঘ বছর ধরে রাঙামাটিবাসি এ সমস্যার সম্মুখিন। কিন্তু তবুও কচুরিপানা অপসারণে নেই কোনো কার্যত উদ্যোগ। পাহাড়ি ঢলের কারণে কচুরিপানার সাথে ভেসে আসা কাঠ, বাঁশের কারণে জেলেদের জাল ছিড়ে যাচ্ছে। এছাড়া ভাসমান কচুরিপানার কারণে জাল ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। কাপ্তাই হ্রদের কচুরিপানা অপসারণ এখন সময়ের দাবি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন