১ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৪:৫৭

বন্ধুর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায়ে যুবকের ১৩ বছর কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বন্ধুর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায়ে যুবকের ১৩ বছর কারাদণ্ড
বাথরুমের ভেতর গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে বন্ধুর স্ত্রীর ভিডিও ধারণ করে অর্থ দাবির দায়ে এক যুবককে ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহীর বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত। একই সঙ্গে জরিমানা করা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। অনাদায়ে ৬ মাস করে আরও ১৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
 
জরিমানা টাকা আদায় করে তা ভিকটিমকে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। মামলার আলাদা তিনটি ধারায় বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত আসামিকে এই জেল-জরিমানা করা হয়।
 
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
 
দণ্ডিত আসামির নাম দেওয়ান আরিফুর রহমান ওরফে আরিফ (৩৮)। তিনি বগুড়া জেলার উপশহর হাউজিং এস্টেট এলাকার মৃত দেওয়ান আক্তারের ছেলে। এ মামলায় জামিন পাওয়ার পর তিনি দীর্ঘদিন থেকেই পলাতক আছেন। তার অনুপস্থিতেই রায় ঘোষণা করেন আদালতের বিচারক।
 
রায় ঘোষণার পর রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইসমত আরা বেগম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২০২১ সালের ২ মে বগুড়া সদর থানায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। বগুড়ার উপশহর পদ্মা ভবন এলাকার বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
 
মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, আসামি আরিফ তার বন্ধু। বন্ধুত্বের সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে বাসায় যাতায়াত। কোনো এক সময় তিনি তার বাথরুমে গোপন ক্যামারা স্থাপন করেন। ওই ক্যামেরায় তার স্ত্রীর গোসলের ভিডিও গোপনে ধারণ করেন। এরপর বাদীর স্ত্রীর ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারে তা পাঠিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। বাদীর স্ত্রী লোকলজ্জার ভয়ে তার এক আত্মীয়কে টাকা দেওয়ার নাম করে আরিফকে ৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। কিন্তু এরপর বাদীর স্ত্রীর কাছে আবারও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন আরিফ। এরপর স্বামীকে ঘটনাটি খুলে বলেন। বিষয়টি বাদী জানার পর আসামি আরিফকে তার মুঠোফোন ও ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ডিজেবেল করে দেন এবং হোয়াটসঅ্যাপে নম্বরটি ব্লক করে রাখেন। কিন্তু গেলো বছরের ২৬ মার্চে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে আরিফ আবারও বাদীকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন এবং ধারণকৃত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান।
 
পরে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আরিফের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেন। পরে তাকে অভিযুক্ত করে আদালতের চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় ঘোষণা করা হয়।
 
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর