শিরোনাম
২ ডিসেম্বর, ২০২২ ২১:১৯

বেতন বকেয়া, ৪২২ পরীক্ষার্থীকে বের করে দিলেন শিক্ষক

নাটোর প্রতিনিধি

বেতন বকেয়া, ৪২২ পরীক্ষার্থীকে বের করে দিলেন শিক্ষক

কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর বেতন বকেয়া আছে এমনটি শোনা মাত্র চলমান পরীক্ষা বন্ধ করে ৪২২ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নাটোরের বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের নির্দেশে হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধ করা হলে মন খারাপ করে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরেন শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা না দিয়ে বাড়িতে ফেরার পর অভিভাবকরা কারণ জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা ঘটনা খুলে বললে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। পাশাপাশি এলাকার শিক্ষানুরাগী, অন্যান্য শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল ঘটনাটি অতি দুঃখজনক ও অপমানকর বলে উল্লেখ করে নিন্দা প্রকাশ করেন। 

জানা যায়, বিদ্যালয়ের বার্ষিক সমাপনী পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের পরীক্ষা ছিলো। ১০ টার ঘণ্টা বাজলে শিক্ষকরা উত্তরপত্র (খাতা) ও প্রশ্নপত্রও প্রদান করেন। হঠাৎ প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান পরীক্ষার হলে এসে কে কে বেতন পরিশোধ করেনি তা জানতে চান। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বেতন বকেয়া আছে বলে স্বীকার করেন। এতে রাগান্বিত হয়ে প্রধান শিক্ষক খাতা ও প্রশ্নপত্র কেড়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে হল থেকে বের করে দেন। 

অভিভাবক মোসলেমউদ্দিন মন্ডল, রঞ্জিত কুমার কুন্ডু, মুকুল হোসেন সহ অনেকেই জানান, বেতন বকেয়া যার, তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারতো। এক্ষেত্রে যাদের পরিশোধ রয়েছে তাদের কাছ থেকে খাতা-প্রশ্নপত্র কেড়ে ক্লাস রুম থেকে বের করে দেওয়া ঠিক হয়নি। এছাড়া বেতন আদায় করার জন্য এ আচরণ রীতিমতো স্বেচ্ছাচারিতা ও আপত্তিকর। 

বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের নাটোর জেলা আহ্বায়ক অমর ডি কস্তা জানান, ঘটনাটি সম্পূর্ণই শিশু সুরক্ষা নীতিমালা ও আচরণবিধি পরিপন্থী হয়েছে। কোমলমতি এ সকল শিক্ষার্থীদের মনে আঘাত দেওয়া মোটেও ঠিক হয়নি।

ওই বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক লাভলী বেগম জানান, খাতা ও প্রশ্নপত্র বিতরণের আগে যদি প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা না নিতে নির্দেশ দিতেন তাহলে হয়তো ঠিক হতো। এতে করে প্রশ্নপত্র বাইরে চলে গেছে এবং আমাদেরকে সারাদিন পরিশ্রম করে আবার প্রশ্ন তৈরী করতে হচ্ছে। এছাড়া এতে বেশ পরিমাণ অর্থও অপচয় হলো। 

প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি যা করেছি, ঠিকই করেছি। 

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রধান শিক্ষক কাউকে না জানিয়ে একাই সিদ্ধান্ত নিয়ে এ কাজটি করেছেন। তিনি অবশ্যই এই কাজটি ঠিক করেননি। এ বিষয়ে শুক্রবার জুম্মার পর প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা হয়েছে। আগামী রবিবার ওই পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হবে। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রউফ জানান, ঘটনাটি সরকারী বিধিমালার পরীপন্থী। প্রধান শিক্ষক এভাবে পরীক্ষা বন্ধ করতে পারেন না। আগামী রবিবার জেলা মাধ্যমিক অফিসার স্যারের সাথে মিটিং করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর