৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:৫৬

অতিথি পাখি ও লাল কাঁকড়ার রাজ্য ‘চর বিজয়’

অনলাইন ডেস্ক

অতিথি পাখি ও লাল কাঁকড়ার রাজ্য ‘চর বিজয়’

বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা অনন্য এক ভুবন, যার নাম ‘চর বিজয়’। চারদিকে অথৈ জলরাশি, আর শুধুই ধু-ধু বালু। চেনা-অচেনা নানা প্রজাতির অতিথি পাখির কলকাকলী ও লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি। সমুদ্রের মধ্যখানে এ যেন এক টুকরো ভূমি। নেই জনবসতি কিংবা গাছপালা। সাগরকন্যা কুয়াকাটার সৈকত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে পর্যটনের নতুন এক সম্ভাবনা।

জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে এ চরটি পানিতে ডুবে থাকে। আর শীত মৌসুমে সাগরের মধ্যে বিশাল এলাকা নিয়ে জেগে ওঠে। ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের অভয়ারণ্য হওয়ায় সারা বছর এর আশপাশে থাকে জেলেদের উপস্থিতি। তবে ভ্রমণপিপাসুদের একটি দল এই চরটির সন্ধান পায়। জেলেদের ভাষায় এটি ‘হাইরের চর’ হলেও বর্তমান ‘চর বিজয়’ নামে বেশ পরিচিত। প্রতি বছরই শীত মৌসুমে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। আবার শীত কমে গেলে পাখিগুলো যে যার মতো অন্যত্র চলে যায়। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এ চরটি যোগ হয়েছে এক নতুন মাত্রা। ‘চর বিজয়’ পর্যটন শিল্পে ঘটবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন, এমন প্রত্যাশা করছেন পর্যটকসহ ট্যুরিস্ট ব্যবসায়ীরা।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কেএম বাচ্চু বলেন, চরটির চারদিকে সমুদ্রের গর্জন ও পাখির কিচিরমিচির শব্দ, যে কারো মনকে জয় করে নেবে। একই সাথে দেখা যাবে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত। তাই প্রতিদিনই পর্যটকরা ট্রলার যোগে ছুটে যায় এ চরটিতে। কুয়াকাটা সৈকত থেকে ট্যুরিস্ট বোট নিয়ে মাত্র দেড় ঘণ্টায় চর বিজয় পৌঁছানো যায়।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজম্যন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, প্রায় ১০ বর্গ কিলোমিটারের এই চরটিতে কোনো জনবসতি কিংবা গাছপালা নেই। জনবসতিহীন চরজুড়েই লাল কাঁকড়া ও নানা প্রজাতির অতিথি পাখির অভয়াশ্রম। ২০১৭ সালের বিজয়ের মাসে এ চরটি আবিষ্কার হয়েছে। তাই চর শব্দের সঙ্গে বিজয় শব্দটি যুক্ত করে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তারা। ওইসময় জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বন বিভাগ এ চরে গোল, ছইলা, কেওড়া, সুন্দরসহ ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছের চারা রোপণ করেছে।

মহিপুর বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ চরটিতে পশু পাখির অভয়ারণ্য গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সাগরের ঢেউয়ের তোরে সেসব চারাগুলো এখন আর নেই। এ বছরও ওই চরে বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, এ চরটি কুয়াকাটার জন্য আশীর্বাদ। তবে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য চর বিজয়কে আকষর্ণীয় পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর