ধানের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবিত হওয়ায় কৃষি জমি ক্রমাগত সংকোচিত হওয়া সত্ত্বেও ফসল উৎপাদন থেমে নেই বরং প্রতিবছর বেড়ে চলেছে। আর এই অপার সাফল্যের পেছনে রয়েছে সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং কৃষি বিজ্ঞানী, কৃষি সম্প্রসারণবিদ ও কৃষকদের ঐকান্তিক এবং নিরলস প্রচেষ্টা। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত আগাম জাতগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চলতি আমন মৌসুমে প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে ব্রি উদ্ভাবিত ধান আবাদ হয়েছে। এতে রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলার কৃষকরা বাড়তি ৬ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।
কৃষি ও ব্রি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় এধান আমন ধানের আবাদ হয়েছে প্রায় সোয়া ৬ লাখ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ প্রায় আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ধান উৎপাদন হয়েছে। সাধারণত আমান ধান প্রতি হেক্টরে ৩ থেকে সাড়ে ৩ টন ফলন পাওয়া যায়। অপরদিকে ব্রি উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ৯৩, ৯৪,৯৫ ও ব্রি হাইব্রিড ধানে ফলন পাওয়া গেছে সাড়ে ৬ মেটিক টন করে। সাধারণ আমনের চেয়ে ব্রি উদ্ভাবিত ধানের উৎপাদন হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সেই হিসেবে ৪০ শতাংশ ব্রি উদ্ভাবিত ধান কৃষকদের বাড়তি উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৬ লাখ মেট্রিন টন।
ব্রি অফিস জানায় , রংপুর সদর উপজেলার ফাজিলখাঁয় চলতি আমন মৌসুমে ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় রংপুর ১১০ জন কৃষকের মাঝে ব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ৯৩, ব্রি ধান ৯৫ ও ব্রি হাইব্রিড-৬ ধানের ৪৫০ কেজি বীজ বিতরণ করে। ব্রি রংপুর ও অধিক ফলনশীল হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবন, গবেষণা ও আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় ব্রি উদ্ভাবিত নতুন জাত ব্রি ধান ৭৫, ব্রিধান ৯৫ এবং ব্রি হাইব্রিড ধান ৬ এর ১০ বিঘা জমিতে প্রর্দশনী স্থাপন করা হয় রংপুর সদরের পালিচড়া এলাকায়। সেই প্রর্দশনী প্রর্দশনীর ফলাফলে দেখা যায় যে ব্রি ধান ৭৫ এর ফলন প্রতি হেক্টরে ৬ দশমিক ৯৭ টন ও ব্রি হাইব্রিড ধান ৬ এর প্রতি হেক্টরে ৬ দশমিক ৬২ টন ফলন পাওয়া গেছে।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের আমন চাষি আফজাল হোসেন, নুরুজ্জামান জানান, তারা এবার ব্রি উদ্ভাবিত ধান আবাদ করে প্রায় দ্বিগুণ ফসল পেয়েছেন।
রংপুর ব্রি কার্যালয়ে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইনচার্জ রাকিবুল হাসান বলেন, এবার প্রাকৃতিক দুয়োগ না থাকায় আমনের ফলন ভাল হয়েছে। কৃষকরা ব্রি উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের ধান প্রতি হেক্টরে ৬ থেকে সাড়ে ৬ মেট্রিক টন ফলন পেয়েছেন যা সাধারণ আমনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।
বিডি প্রতিদিন/এএম