রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আর মাত্র বাকি রয়েছে ৪দিন। প্রার্থীরা নির্বাচনি ব্যয়ের যে হিসেব দিয়েছেন তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ করার অভিযোগ উঠেছে প্রতেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এদিকে শুক্রবার ইভিএমে মক ভোটিং শুরু হলেও ভোটারদের সারা লক্ষ্য করা যায়নি। ভোটারের অভাবে কেন্দ্রগুলো ফাঁকা ছিল। নির্বাচন উপলক্ষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর রবিবার থেকে ৫ দিন আগ্নেয়াস্ত্রসহ চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রাস্ত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ২৫ ডিসেম্বর ভোর ৬ টা থেকে ২৯ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারীদের অস্ত্র প্রদর্শন ও তা নিয়ে চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। এছাড়া আগামী ২৬ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ২৭ ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত এই নির্বাচনী এলাকায় ট্রাক ও পিকাপ চলাচল করতে পারবে না। ২৫ ডিসেম্বর রোববার মধ্যরাত ১২টা থেকে ২৮ ডিসেম্বররাত ১২টা পর্যন্ত মোটর সাইকেল চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এদিকে নির্বাচনে সাংবাদিকদের জন্য ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করে তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং ভিডিও ধারণ করতে পারবেন সাংবাদিকরা। তবে ভোটকেন্দ্রে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করা যাবে না। এছাড়া সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের জন্য কোনো স্টিকার ইস্যু করা হবে না। সাংবাদিকরা ভোট গণনা কক্ষে ভোট গণনা দেখতে পারবেন, তবে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না।
অপরদিকে প্রার্থীদের নির্বাচন অফিসে আয় ব্যয়ের হিসেব দাখিল করা সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পোস্টার বাবদ খরচ দেখিয়েছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা, ক্যাম্প ৩৩টির প্রতিটিতে খরচ ৩ হাজার করে ৮৮ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ক্যম্প একটিতে খরচ ৫৫ হাজার টাকা। নিজের এবং এজেন্টদের খরচ ৬০ হাজার টাকা, প্রিটিং খরচ ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা, ডিজিটাল ব্যানার বাবদ খরচ ২৪ হাজার ৭৫০ টাকা। পথ সভা ৬৬টি ১১০০ টাকা করে ৭২ হাজার ৬০০ টাকা এবং কর্মী সংখ্যা ২০০ জনের প্রতিদিন ১০০ টাকা করে ৩ লাখ টাকা খরচ করবে বলে নির্বাচনি ব্যয় উল্লেখ করলেও এরচেয়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ করেছেন তিনি এমনটাই অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে।
অপরদিকে ডালিয়া পোস্টার বাবদ একলাখ টাকা, নির্বাচনি ক্যাম্প বাবদ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ক্যাম্পে ১ লাখ টাকা, এজেন্ট বাবদ ৪০ হাজার টাকা, মুদ্রণ বাবদ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ব্যানার বাবদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যানবাহন ভাড়া ও প্রচার বাবদ ২ লাখ টাকা খরচ দেখানো হলেও তিনি কয়েকগুণ বেশি খরচ করছেন বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। নির্বাচনে ৯ জন মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ৬৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর ১৮৩ জনসহ মোট ২৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ১৩৫ জন বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। ওইসব প্রার্থীরা নির্বাচনে একেক জন ৫ লাখ টাকার কয়েকগুণ বেশি খরচ করেছেন। খরচ নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন অফিসের কার্যকর ভ‚মিকা নেই বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এদিকে শুক্রবার নগরীর ৩৩ টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন কেন্দ্রে ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের স্বচ্ছ ধারণা দেয়ার লক্ষ্যে মক ভোটিং শুরু হয়েছে। দুপুরে নগরীর আর্দপাড়ায়,লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ, রাবাটসনগঞ্জসহ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে নির্বাচন অফিসের লোকজন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। ভোটারের উপস্থিতি একেবারে কম। স্থানীয়দের অভিযোগ নির্বাচন অফিস ঠিকমত প্রচার-প্রচারণা না করায় মক ভোটিংয়ে উপস্থিতির হার কম।
নির্বাচন কর্মকর্তা আফতাব হোসেন বলেন, নগরীর ৩৩ টি ওয়ার্ডে মক ভোটিং শুরু হয়েছে। শনিবারও মক ভোটিং অনুষ্ঠিত হবে। কত শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে তা এখন বলা সম্ভব নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ