স্কুলের বই চুরি ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কুমড়িয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মন্টু আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার দিবাগত রাতে মন্টু আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্কুল শিক্ষক মো. মন্টু আলী খানসামার কুমড়িয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনছুর আলীর ছেলে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বদ্ব চলছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্টু আলী ও মোকছেদ আলীর মধ্যে কয়েক দফায় বাগবিতণ্ডা ও সংঘর্ষ হয়েছে। এই ঘটনায় ম্যানেজিং কমিটির বৈধতা ও প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে হাইকোর্ট ও জজকোর্টে বর্তমানে মামলা বিচারাধীন।
স্থানীয়রা জানায়, বই উৎসবের মাধ্যমে বই বিতরণের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রেরিত নতুন বই স্কুলের অফিসে সংরক্ষিত ছিল। সেই বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল গত ১৬ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত এডহক কমিটির রেজুলেশনে দায়িত্ব পাওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোকছেদ আলী। কিন্তু ২০২০ সালের ১ নভেম্বর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করা মন্টু আলী নিজেকে বৈধ দাবি করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করেন তিনি।
অবৈধভাবে অফিসের তালা ভাঙা, বই চুরি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে মন্টু আলীকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মোকছেদ আলী। সেই অভিযোগে মন্টু আলীকে গত রবিবার দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষক মন্টু আলী সাংবাদিকদের বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী জিপির মতামত আমার পক্ষে রয়েছে। তাই আমি বই বিতরণ করেছি কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা ভুল ব্যাখ্যা করে মোকছেদ আলীকে দায়িত্ব দিয়েছে। আমি অবৈধ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করব।
মামলার বাদী মোকসেদ আলী বলেন, বৈধভাবে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। মন্টু আলী তালা ভেঙে বই চুরি করেছে তাই সরকারি সম্পত্তি চুরি ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করায় থানায় মামলা করেছি।
খানসামা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের বৈধ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হলেন মোকছেদ আলী। তিনি ছাড়া যদি অন্য কেউ অফিস কক্ষের তালা ভেঙে বই নিয়ে যায় সেটি আইন বহির্ভূত কাজ। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খানসামা থানার ওসি চিত্তরঞ্জন রায় জানান, লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। সেই মোতাবেক মন্টু আলীকে গ্রেফতার করে মহামান্য আদালতে সোমবার পাঠানো হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত