নিহতের পরিচয় শনাক্ত যেন না করা যায় সেজন্য হত্যার পর মানিকগঞ্জে দেহ এবং টাঙ্গাইলে মাথা ফেলে রাখে আসামিরা। ২০০৬ সালে এমন লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করে পালিয়ে ছিল ১৭ বছর। এরপরও হয় হয়নি শেষ রক্ষা। আব্দুল কুদ্দুস (৪১) নামের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪।
রবিবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর আকুয়া বাইপাস এলাকায় র্যাব-১৪ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১৪’র অধিনায়ক, অতিরিক্ত ডিআইজি মহিবুল ইসলাম খান। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর জেলার বহেরার চালা এলাকা থেকে কুদ্দুসকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১৪’র অধিনায়ক বলেন, ২০০৬ সালের মে মাসে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ার বেতুলিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামকে (৩৪) হত্যা করে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় দেহ এবং টাঙ্গাইলের নাগরপুরে খন্ডিত মস্তক ফেলে পালিয়ে যায় আসামিরা। এ ঘটনায় ওই বছরের ৩১ মে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার এসআই আব্দুল জলিল বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার পর থেকে আসামি পলাতক ছিলেন। এই মামলায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামি আব্দুল কুদ্দুসকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে র্যাব অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি আব্দুল কুদ্দুসসহ অন্য আসামিরা শহিদুল ইসলামের সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরি করে। বন্ধুত্বের এক পর্যায়ে তাকে পাত্রী দেখানোর কথা বলে মানিকগঞ্জে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে রাজা মিয়া, সাহেদ, কুদ্দুস, বিষ্ণু সুইপার রশি দিয়ে গলা পেচিয়ে, রুমাল দিয়ে মুখ চেপে ধরে ভিকটিম শহিদুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর শহিদুলের গলা কেটে মানিকগঞ্জে ও মাথা টাঙ্গাইলে নিয়ে ফেলে দেয়।
মহিবুল ইসলাম খান বলেন, এরপর থেকে আসামি আব্দুল কুদ্দুস পলিয়ে ছিলেন। পালিয়ে থাকা অবস্থায় নিজের মামাত ভাই’র নাম, তার বাবার নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে নিজের আইডি কার্ড তৈরি করে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ