সিরাজগঞ্জে সিএনজি চালককে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রায় ২ বছর পর মূল আসামি শিমুল খানকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগশন (পিবিআই)। পাবনা জেলার আমিনপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আসামি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শহিদগঞ্জ এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে শিমুল খান (২৪)।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আটক আসামী শিমুল আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেছেন। আটক আসামিরা জবানবন্দিতে জানিয়েছে- আসামী শিমুল ও অপর আসামী রেজাউল দুইজনেই মাদকাসক্ত ছিল। ভিকটিম মেহেদীর কাছে আসামী শিমুল সিএনজি চালানো শিখত। হত্যার ঘটনার ২০ দিন আগে ভিকটিম মেহেদীর প্রতিবেশী চাচা শাকিল আসামী রেজাউল এর কাছে মোবাইল বন্ধক রেখে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট নেয়। পরে শাকিল দাবী করে আসামী রেজাউলের দেওয়া ইয়াবা ট্যাবলেট নকল। তাই শাকিল তার দেওয়া মোবাইল রেজাউলের কাছ থেকে ফেরত চায়। আসামী রেজাউল ইয়াবা ট্যাবলেট না দেওয়া পর্যন্ত মোবাইল ফেরত দিতে রাজি হয় না। এ ঘটনা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে শাকিল বিষয়টি সিএনজি চালক মেহেদী হাসান রাজকে জানালে তিনি আসামী রেজাউল ও শিমুলকে শাকিলের মোবাইল ফোন ফেরত দিতে বলে। কিন্তু আসামী রেজাউল মোবাইল ফেরত দিতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিম মেহেদী হাসান রাজ আসামী রেজাউল ও শিমুলকে পুলিশের কাছে মাদকসহ ধরিয়ে দেওয়ার হুমকী দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আসামী রেজাউল ও শিমুল ভিকটিমকে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দেওয়ার কথা বলে শিয়ালকোল ইউনিয়নের আনারস বাগানে নিয়ে যায়। পরে রেজাউল ও শিমুল দুইজন মিলে নেশাজাতীয় দ্রব্য ও ঘুমের ঔষধ সেবন করিয়ে গলায় গামছা বেধে তাকে হত্যা করে। পরে শিমুল মেহেদীর গলা কেটে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে আসামিরা ভিকটিমের মরদেহ ঘটনাস্থলে ফেলে ভিকটিমের সিএনজি নিয়ে বগুড়া জেলার শেরপুর থানার ধুনট বাজারে ফেলে আসে।মামলার তদন্তকালে আসামী রেজাউল শেখ (৩১) কে সদর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। তিনি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার খোর্দ্দ শিয়ালকোল এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের ছেল।
প্রসঙ্গত, নিহত মেহেদী হাসান রাজ (২৪) পেশায় একজন সিএনজি চালক ছিল। গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সিএনজিসহ নিজ বাড়ী থেকে বের হয়। পরে মেহেদী বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে। নিখোঁজের ৮ দিন পর শিয়ালকোল ইউনিয়নের ফুলবাড়ি আনারস বাগান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে মেহেদীর বাবা সেলিম শেখ বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি সদর থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে।
বিডি প্রতিদিন/এএম