শেরপুরের নালিতাবাড়ীর চাঞ্চল্যকর শিশু (১২) ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আহম্মদ আলীকে (৫৮) গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪। বিচারের ১৭ মাস পর সোমবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুরের গাজীপুরা এলাকায় আসামির মেয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে গ্রেফতার এড়াতে বেশভূষা বদলে ফেলে গাজীপুর এলাকায় বিভিন্ন মাদ্রাসায় ও বাসাবাড়িতে আরবি শিক্ষকতা করে আসছিলেন তিনি।
গ্রেফতার আহম্মদ আলী নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঁশকান্দা গ্রামের মৃত হাবিল উদ্দিন ফকিরের ছেলে। গ্রেফতারের পর তাকে মঙ্গলবার সকালে নালিতাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাবে জানায়, ভিকটিম একজন দরিদ্র পরিবারের কন্যা। মা ভিক্ষা করে ও বড় ভাই দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অভিযুক্ত আহম্মদ আলী ভিকটিমের প্রতিবেশী এবং চার সন্তানের জনক। ঘটনার দিন ২৭ আগস্ট ২০১৭ ভিকটিমের মা ও বড় ভাই জীবিকার তাগিদে কাজে যান। মায়ের আসতে দেরি হওয়ায় রাত আটটার দিকে ওইদিন ভিকটিম মাকে খুঁজতে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয় বাঁশকান্দা বাজারে যায়। মাকে না পেয়ে বাড়িতে ফেরার সময় আহম্মদ ওই শিশুর পিছু পিছু বাড়িতে আসে।
এসময় বাড়িতে কেউ না থাকায় ওই শিশুটিকে টাকা পয়সার লোভ দেখিয়ে আপত্তিকর প্রস্তাব দেয়। ভিকটিম অস্বীকৃতি জানালে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনার সময় ভিকটিমের মা এসে পড়লে আহম্মদ দৌড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ও মা ভিকটিমকে ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই বাদী হয়ে আহম্মদ আলীকে আসামি করে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করে। তখন থেকেই আহম্মদ পালিয়ে ছিলেন। আসামি দীর্ঘ ৮ বছর যাবত নিজের পরিচয় গোপন করে গাজীপুর এলাকায় বিভিন্ন মাদ্রাসায় ও বাসাবাড়িতে আরবি শিক্ষকতা করে আসছিলেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে গত ১১ অক্টোবর ২০২১ সালে শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্ত আহম্মদ আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদয়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই