রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেফ্রোলজি বিভাগে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিসের অবস্থা খুবই নাজুক। রোগীদের সব ধরনের উপকরণ কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। ফলে রোগীদের অর্থিক খরচের পাশাপাশি চিকিৎসায় ভোগান্তি বাড়ছে। অনেকে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না।
রমেক হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, রংপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার দুই শতাধিক কিডনি রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তারা অগ্রীম টাকা জমা দিয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। তাদের প্রতি সপ্তাহে অন্তত চার দিন ডায়ালাইসিস করার জন্য আসতে হয়। এ ছাড়াও নতুন রোগী তো আছেই। কিছুুদিন আগে ২৮টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে ৯টিই বিকল হয়ে যায। পরবর্তীতে এসব ঠিক করা হলেও চিকিৎসার উপকরণ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। রোগীরা অভিযোগ করেছেন, এই বিভাগের রোগীদের স্যালাইন, সুইসহ অন্যান্য ওষুধ পথ্য সব জিনিস বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এতে ডায়ালাইসের ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার টাকার মত। ফলে সরকারি হাসপাতাল হিসেবে যে সব সেবা পাওয়ার কথা, তারা তা পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, একজন কিডনি রোগী টাকা জমা দিয়ে সপ্তাহে দুদিন করে ৪৮ বার ডায়ালাইসিস করাতে পারেন। এটি রোগীদের প্যাকেজ সুবিধা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যাদের দুটো কিডনি বিকল, একমাত্র তাদের সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস করানো হয়। আগে সব ধরনের উপকরণ হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হতো। দেড় মাস ধরে প্রত্যেক রোগীকে ডায়ালাইসিসের সব উপকরণ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। রোগীদের অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডে গত এক সপ্তাহে ৭/৮ জন রোগী মারা গেছেন। তাদের অনেকেই দরিদ্র্যতার কারণে উপকরণ ঠিক মত কিনতে পারেনি। তবে ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিসক ও নার্সরা জানিয়েছেন, উপকরণ সংকটের বিষয়টি একাধিকবার লিখিত ভাবে জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিচ্ছেনা।
ঠাকুরগাঁও থেকে আসা সালমা বেগম নামে এক রোগীর স্বজন জানালেন, চিকিৎসার সব উপকরণ কিনতে না পারায় তার ডায়ালাইসিস হচ্ছে না। ফলে শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। প্রায় একই ধরণের কথা বললেন কয়েজন রোগীর স্বজন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক আ.ম আখতারুজ্জামান বলেন, ২৮টি ডায়ালাইসস মেশিনের সবগুলোই চালু রয়েছে। তবে উপকরণ সংকট রয়েছে। উপকরণ চেয়ে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। উপকরণ এলে রোগীদের আর কোন সমস্যা থাকবে না বলে তিনি মনে করেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ