গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে একটি আফ্রিকান স্ত্রী বাঘ প্রায় দেড় মাস ধরে গুরুতর অসুস্থ। তাকে পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তবে এতে বাঘটির স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে না। না খেয়ে এখন অনেকটা জীবন -মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে বাঘটি।
বুধবার দুপুরে বাঘের অসুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম।
সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুসারে , পার্ক প্রতিষ্ঠালগ্নে ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অন্যান্য প্রাণীর সাথে বেশ কয়েকটি বাঘ আনা হয়েছিল। এদের মধ্যে এই স্ত্রী বাঘটির গত ৬ মাস আগে অসুস্থতার লক্ষণ দেখা যায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে বাঘটি খাদ্যগ্রহণ কমিয়ে দেয়। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বাঘটি খাবার গ্রহণ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে বাঘটির চিকিৎসা শুরু হয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত বাঘটি অল্প-অল্প খাদ্য গ্রহণ শুরু করে। কিন্তু ৭ মার্চ থেকে আবারও খাবার বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে এটি কোনো খাবার না খেয়ে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছে।পার্ক সূত্র জানায়, রাজধানীর কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারি হাসপাতালের সাবেক প্রধান ভেটেরিনারি অফিসার এবিএম শহীদুল্লাহ সরেজমিনে অসুস্থ বাঘটিকে পর্যবেক্ষণ করেন।তার তত্ত্বাবধানে বাঘটির চিকিৎসা চলছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, বন্যপ্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রের ভেতর একটি কক্ষে বাঘটি মেঝেতে শুয়ে আছে। সারা শরীর শুকিয়ে গেছে। চোখগুলো প্রায় বেশিরভাগ সময় বন্ধ রাখছে সে। পুরো মাথা দুই পায়ের দিকে ঝুঁকে আছে। বাঘটির শারীরিক অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন সেখানকার বন্যপ্রাণী চিকিৎসক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক বলেন, বাঘটির আনুমানিক বয়স প্রায় ১৭বছর। বর্তমানে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। পার্কের মেডিকেল বোর্ড ও বিশেষজ্ঞ বন্যপ্রাণী চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন সে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত। লিভার, হার্ট, ফুসফুস কাজ করছে না। বাঘটির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজিতে পাঠানো হয়েছে। তবে এর বর্তমান যে অবস্থা তাতে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সাফারি পার্কে মোট ৯টি বাঘ আছে। এগুলোর মধ্যে ছয়টি স্ত্রী ও তিনটি পুরুষ। এর মধ্যে বিরল প্রজাতির ১টি সাদা রঙের বাঘও আছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল