দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে সমুদ্র পথে ইতালি যাওয়ার সময় সাগরে ডুবে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ১৩ জন যুবক। এদিকে সাগরে যুবে নিহত ও নিখোঁজের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দালালের বাড়ি ঘেড়াও করে নিহত ও নিখোঁজের স্বজনরা। নিহত ও নিখোঁজরা জেলার রায়পুরা ও বেলাবো উপজেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে নিহত যুবক নাম আব্দুল নবীর লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছেছে।
নিহত আব্দুল নবী রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের বড়চর গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছোট ছেলে। আর নিখোঁজ ৬ জনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী বেলাবো উপজেলার টান লক্ষীপুর লক্ষীপুর, জালালাবাদ ১ জন ও নরারয়নপুরের ৪ জন রয়েছে।
পরিচয় পাওয়া নিখোঁজ ৬ যুবকরা হলো বেলাবো উপজেলার টান লক্ষীপুর ও চর লক্ষীপুর এলাকার বিল্লাল মিয়ার ছেলে সৈকত (২০), রহিম মিয়ার ছেলে আবু তাহের (২৭), রতন মিয়ার ছেলে জহিরুল ইসলাম (১৯), আউয়াল মিয়ার ছেলে উজ্জল (১৮), ওবায়দুল্লাহর ছেলে রহমত উল্লাহ (২০), মোক্তার হোসেন এর ছেলে জিহাদ (১৯) এবং কুলিয়ারচর উপজেলার বড় ছয়সুতি এলাকার বাছেদ মিয়ার ছেলে স্বপন (২৭)। এছাড়া জালালাবাদের ১ জন ও নরারয়নপুরের ৪ জন রয়েছে। এসব যুবক ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ করে দালাল চক্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে।
শুক্রবার নিহত আব্দুল নবীর বাড়িতে গেলে তার ভাই ও মা সাংবাদিকদের জানায়, আব্দুল নবী এর আগে ৫ বছর সৌদি প্রবাসী ছিলো। সৌদি থেকে দেশে ফিরে চার মাস আগে সে দালাল চক্রের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ইতালি পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে। এক মাস আগে পরিবারের সাথে শেষ যোগাযোগ হয়েছিলো আব্দুল নবীর। এরপর আর তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার ২২ জুন রাত আনুমানিক ৯টায় খবর আসে আব্দুল নবীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
একই চিত্র বেলাবো উপজেলায়। বেলাব উপজেলার টান লক্ষীপুর, চর লক্ষীপুর,জালালাবাদ ও নরারয়নপুরের ১৩ জন যুবক নিখোঁজ রয়েছে। রায়পুরার নবী নিহত হওয়ার খবর পেয়ে বেলাবো উপজেলার টান লক্ষীপুর এলাকার দালাল চক্রের সদস্য আলম মিয়ার বাড়িতে নিখোঁজদের স্বজনরা ভিড় জমায়। ওই সময় নিখোঁজদের ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানায়।
নিহত আব্দুল নবীর বড় ভাই মাহ আলম বলেন, নরসিংদী ও আশপাশ জেলার ১১৫ জন যাত্রী সাগর পথে ইতালি যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। ৮/১০ কি:মি: যেতে না যেতেই সাগরে বোট ফেটে য়ায়। পরে তারা ভয়ে ফিরে আসে। অভিভাবকদের সাথে গ্রাম্যসালিসে বসে আমাদের পাসপোর্ট ফেরত দিতে বলি, কিন্তু সে দেয়নি। জোর করে সে লোকগুলোকে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর খবর আসে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনিবার্ণ চৌধুরী, রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আজিজুর রহমান ও বেলাবো থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীর আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এখনই খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ