ঢাকা থেকে বগুড়ার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা টিএমএসএসের পশু অভয়ারণ্যের জন্য নিয়ে আসার সময় চিত্রা প্রজাতির পাঁচটি হরিণের মাঝে চারটি মারা গেছে।
জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে ক্রয়ের পর রবিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ট্রাকে করে হরিণগুলো পাঠানো হয় বগুড়া টিএমএসএসের পশু অভয়ারণ্যে। ট্রাকে করে মধ্যরাতে চিত্রা প্রজাতির হরিণগুলো ঢাকা থেকে বগুড়ায় এসে পৌঁছানোর পর খাঁচার মধ্যে চারটি হরিণকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আর একটি হরিণ ছিলো অসুস্থ।
বগুড়ার টিএমএসএসের পশু অভয়ারন্য সূত্র জানায়, বগুড়ার নওদাপাড়ায় টিএমএসএস তাদের বিনোদনপার্কে একটি বেসরকারি পশু অভয়ারণ্য বা চিড়িয়াখানা গড়ে তুলেছে। সেখানে ৯০ শতক জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয়েছে হরিণ প্রতিপালন বিভাগ। চলতি বছরে হরিণ প্রতিপালনের জন্য লাইসেন্স পায় সংস্থাটি। লাইসেন্স পাওয়ার পর তারা এখন পর্যন্ত জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে দুই চালানে ১১টি হরিণ ক্রয় করেন। প্রতিটি হরিণের মূল্য ধরা হয় ৫০ হাজার টাকা।বগুড়া জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোশারফ হোসেন জানান খবর পেয়ে সদর উপজেলার একটি টিম গিয়েছিল ঘটনাস্থলে। বণ্যপ্রাণী মারা গেলে আমাদের তার একটি রেকর্ড রাখতে হয়। দেখা যায় হরিণ ভয় পেলে, তাকে ধরতে গেলে হার্ট অ্যাটাক করে। এই প্রাণীটি খুবই নাজুক। আর পরিবহণের সময় তো ঝাঁকুনি লাগেই, লাফালাফি করেছে। এসব থেকে মারা গিয়ে থাকতে পারে।
টিএমএসএস পশু অভয়ারণ্যের নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাকিম শাহ জানান, রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ৫ টি হরিণকে অ্যানেসথেসিয়া করে খাঁচায় তোলা হয়। পরে খাঁচাসহ ট্রাকটি বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পথে খবর পাওয়া যায় যে, সাভারে থাকতেই একটি হরিণ মারা যায়। আর রাত আড়াইটার দিকে যখন খাঁচা নামানো হয়, তখন মোট চারটি হরিণকে মৃত পাওয়া যায়। একটি অসুস্থ আছে। এর আগে গত ২৮ মে জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে ৬ টি হরিণ ক্রয় করা হয়। কিন্তু হরিণ হস্তান্তরের সময় অ্যানেসথেসিয়া করার সময় তাদের হাতেই দুটি হরিণ মারা যায়। পরিবহণের সময় আরও একটি। ওই দুইটার পরিবর্তে ২৬ জুন আমাদের আরও দুটি হরিণ দিয়ে পাঠায় জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। আমাদের কাছে আসার পর একটি হরিণ বাচ্চা প্রসব করেছে। এ নিয়ে এখন মোট সাতটি হরিণ রয়েছে টিএমএসএস চিড়িয়াখানায়।
তিনি বলেন, তাদের কাছে থেকে হরিণ নেয়া হচ্ছে, অথচ তারা কোনো গাইড লাইন বা পরামর্শ কিছুই দেয়নি। হরিণ অত্যন্ত সেনসিটিভ (সংবেদনশীল) প্রাণী। কিন্তু তাকে অ্যানেসথেসিয়া করছেন তারা, সেটার প্রয়োগমাত্রা ঠিক আছে কিনা কিছুই আমরা জানি না। কিন্তু আমরা দেখেছি নিয়ে আসার পর হরিণগুলো খুবই দুর্বল থাকে। এ জন্য মনে হয় অ্যানেসথেসিয়ার মাত্রা বা এই কাজের ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি আছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল