হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রহিমা আক্তার (৪০) নামে এক গৃহবধূ দালাল চক্রের আশ্বাসে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে অপারেশন করায় অপচিকিৎসার শিকার হয়ে মারা গেছে। এই ঘটনায় ওই গৃহবধূর ভাতিজা রহমত আলী সোমবার হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন এর আদালতে ডাক্তার ও হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে মামলাটি এফআইআর রুজু করার জন্য হবিগঞ্জ সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলো ডা. এস কে ঘোষ, দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটাল এর পরিচালক সাবেক মেম্বার কাঞ্চন মিয়ার ছেলে এ কে আরিফুল ইসলাম ও তাবির হোসাইন এবং ওই হাসপাতালের ম্যানেজার জনি আহমেদ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের রহিমা আক্তার টিউমার এর চিকিৎসা নিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে আসেন। এ সময় ওই গৃহবধূকে স্বল্প খরচে উন্নতমানের চিকিৎসার কথা বলে ভুল বুঝিয়ে দালালরা সরকারি হাসপাতাল থেকে হবিগঞ্জ শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দি জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তি করানোর পর ওই দিন রাত ১১টা ৫০ মিনিটে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের সাবেক গাইনি চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ রহিমা বেগমের পেটের টিউমারের অপারেশন করেন। ১২ সেপ্টেম্বর রোগীকে জোর করে ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেয়া হয়।
বাড়িতে আসার পর রহিমা বেগমের অবস্থার অবনতি ঘটলে ১ অক্টোবর পুনরায় এস কে ঘোষকে দেখানো হয়। এরপরও তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ২ অক্টোবর রহিমা বেগমকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, হবিগঞ্জে চিকিৎসা করার সময় রহিমা বেগমের খাদ্য নালী, জরায়ু এবং বামপাশের কিডনি কেটে ফেলা হয়েছে। পেটে থাকা টিউমারও যথাযথভাবে অপারেশন করা হয়নি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৫ অক্টোবর রহিমা বেগম মারা যায়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল হাই বলেন, অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে মামলাটি একটি মাইলফলক। এই মামলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিয়ে যে হয়রানি, সেটি বন্ধ হতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/এএ