পাবনা জেলা ছাত্রলীগের বর্ধিত সভায় অস্ত্র প্রদর্শনসহ হামলা, ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনায় দুই নেতাকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা ছাত্রলীগ জরুরি সভা করে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
বহিষ্কৃত দুইজন হলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নির্বাহী সদস্য মোস্তাকিম মুহিব ও শীষ মোহাম্মদ। তাদের মধ্যে মোস্তাকিম মুহিব সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের ছেলে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই দুই নেতাকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। একই সঙ্গে তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নিকট সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হামলার ঘটনাটি ছাত্রলীগ নামধারী মোস্তাকিম মুহিব ও শীষ মোহাম্মদের নেতৃত্বে ঘটেছে। দলীয় পদ না থাকলেও ছাত্রলীগ থেকেই তাদের অব্যাহতি দেওয়া হলো। জেলা ছাত্রলীগ জরুরি সভা করে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে, হামলার ঘটনায় সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে মুস্তাকিম মুহিব বলেন, আমরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। এই সভাপতি-সম্পাদক দায়িত্ব গ্রহন করার বছর পেরিয়ে গেলেও তারা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেনি। নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন দলীয় কার্যক্রমও তারা স্বৈরাচারী প্রক্রিয়ায় পরিচালনা করে। নির্বাচনী কমিটিগুলোতে কেন আমাদের রাখা হচ্ছে না তা জানতে আমরা গিয়েছিলাম। এ সময় তারা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে বঞ্চিত কর্মীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিষয়টিকে হামলা বলে ঘটনা ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।
উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জেলা ছাত্রলীগ বর্ধিত সভার আয়োজন করে। সভায় বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল পাবনা-৫ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স।
দুপুর ১২টার দিকে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের ঘোষণা হয়। নেতা-কর্মীরা নীরবতা পালনের জন্য দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ৪০ থেকে ৪৫ জনের একদল যুবক সেখানে উপস্তিত হন। এ সময় অনুমতি না নিয়ে অনুষ্ঠান করছিস কেন? এমন প্রশ্ন করে তারা ভাংচুর শুরু করেন। এতে নেতা-কর্মীরা আতংকিত হয়ে দৌড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। হামলাকারীরা অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। পরে তারা কয়েকজনকে মারধর করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল