২০ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৯:২৭

ব্যস্ততা কলাপাড়ার শুঁটকি পল্লীতে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

ব্যস্ততা কলাপাড়ার শুঁটকি পল্লীতে

কেউ কাচা মাছ রোদে শুকাতে ব্যস্ত। কেউ বাঁশের তৈরি মাচায় কিংবা বিভিন্ন স্থানে বিছিয়ে রাখছেন মাছ। কেউ বা আবার বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন। শুঁটকি পল্লীতে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হচ্ছে সামুদ্রিক মাছের শুঁটকি। 

কিন্তু এসব শুঁটকি উৎপাদন কিংবা বিপণন ব্যবস্থায় লাগেনি আধুনিকতার ছোঁয়া। এই শিল্পে সরকারের সহযোগিতা পেলে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লইট্টা, ফাহা, ফালিসা, চাবল, কোরাল, হাঙ্গর, ছুরি, ছোট পোয়া, চান্দাকাটা, চিংড়ি, লাক্ষ্যা, চাপিলা, গোলপাতা, ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির সমুদ্রিক মাছ প্রাকৃতিক উপায়ে শুঁটকি উৎপাদন করছেন সংশ্লিষ্ট মৎস্যজীবীরা। শুধু লবণ মেখে এসব শুঁটকি উৎপাদ করা হচ্ছে। তাই এর স্বাদও রয়েছে আলাদা। সব চেয়ে লইট্টা ও চিংড়ির শুঁটকির চাহিদা বেশি। কুয়াকাটায় সারা বছরই বিক্রি হয় এসব শুঁটকি। তবে এখনও সনাতন পদ্ধতিতেই শুঁটকি উৎপাদন করছেন জেলেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুয়াকাটা সৈকতের পশ্চিমদিকে মাঝিবাড়ি, খাজুরা ছাড়াও খালগোড়া, গঙ্গামতি, চর ধুলাসার ও মহিপুরের নিজামপুর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শুটকির ব্যবসা। বিভিন্ন স্পটে অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী সমুদ্রিক মাছের শুঁটকি তৈরি করেন। এখানকার শুঁটকি উন্নত বিশ্বে রফতানি করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, মৌসুমের শুরুতে প্রচুর মাছ পাওয়া গেছে, এখন আকাল চলছে। এছাড়া শুঁটকি প্রক্রিয়ায়াজাত করার জন্য নির্ধারিত কোন জায়গা না থাকায় সৈকতের আশপাশে মাছ শুকাতে হচ্ছে। অনেক সময় উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙে ফেলতে হয় শুঁটকি মাচা। উৎপাদিত এসব শুঁটকি স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন মোকামে চালান করা হয়। তবে কি পরিমাণ শুঁটকি চালান হচ্ছে তার সঠিক তথ্য বলতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।

শুঁটকি ব্যবসায়ী ইদ্রিস মিয়া জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও প্রাকৃতিকভাবে রোদে শুকিয়ে পরিচ্ছন্নতার মধ্য দিয়ে শুঁটকি করা হচ্ছে। একই সাথে পুরুষের পাশাপাশি অনেক নারী শ্রমিকেরও কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে শুকানোর ফলে এখানকার শুঁটকির রয়েছে আলাদা স্বাদ। তাই ঘুরতে আসা পর্যটক-দর্শনার্থীরা নিজ চোখে দেখে শুঁটকি ক্রয় করেও নিচ্ছেন। 

পর্যটক এনামুল কবির বলেন, কুয়াকাটার শুঁটকির অনেক সুনাম রয়েছে। তাই এখানে ঘুরতে এসে বিভিন্ন প্রকার শুঁটকি মাছ কিনে নিলাম। দামও মনে হয়েছে অনেকটা কম।  

কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, সারা দেশে কুয়াকাটার শুঁটকির সুনাম রয়েছে। উন্নত মানের শুঁটকি উৎপাদনের জন্য এই পেশার সাথে সংশ্লিষ্টদেরকে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর