রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মানস নদের জমি ব্যক্তি মালিকানা দাবির কারণে খনন কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যক্তির নামে রেকর্ড হওয়ায় দেখা দিয়েছে জমি জটিলতা। ফলে মানস নদ এখন ফসলের মাঠ। মানসের বুক জুড়ে এখন ধান, পাট, গম, তামাক, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের চাষবাদ হচ্ছে।
তবে নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানার জমি থাকলে তা জরিপের মাধ্যমে চিহ্নিত করে ওই স্থানকে নদী ঘোষণা করার বিধান রয়েছে।
জানা গেছে, রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ২০ ফেব্রুয়ারি খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়। যার দৈর্ঘ্য ১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্ত ১২ মিটার। বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল প্রায় ৪ কোটি টাকা। কাজ শেষ করার কথা ছিল দুই অর্থবছরে। কিন্তু খনন কাজের উদ্বোধন করার পর মর্নেয়া ইউনিয়নের কিছু অংশে খনন করা হয়, যা খনন করা হয়েছে তা এখন ভরাট হওয়ার পথে। নদ খনন কাজ শুরু করার পরেই দেখা দেয় জমি নিয়ে জটিলতা। অনেকের নামে নদীর জমি রেকর্ড হয়ে আছে। অনেকে মানস নদের জমি নিজের বলে দাবি করে চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার ফলে খনন কাজ বন্ধ হয় হয়ে যায়। বর্তমানে মানস নদকে চেনার উপায় নেই। প্রায় পুরো নদই এখন ফসলের মাঠ।মানস নদ গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, গজঘন্টা ও মর্নেয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ বন্দরের পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পীরগাছা উপজেলায় প্রবেশ করেছে। এরপর মানস নদ সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ভেতর দিয়ে যমুনায় পড়েছে। মানস নদের দৈর্ঘ্য ৮৮ কিলোমিটার।
লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, তার ইউনিয়নের ২ কিলোমিটার অংশ খনন করার কথা ছিল। কিন্তু জমি জটিলতার কারণে খনন করা যাচ্ছে না। গজঘন্টা ইউনিয়নেও খনন কাজ হয়নি।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘জমি জটিলতার কারণে মানস নদের খনন কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে ঠিকাদার যেটুকু কাজ করেছে সেটুকুর বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তাছাড়া আপাতত বরাদ্দও নেই।’
নদী বিষয়ক গবেষক বেগম রোকেয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানার জমি থাকলে তা জরিপের মাধ্যমে ওই স্থানকে নদী ঘোষণা করার নিয়ম রয়েছে। জরিপের মাধ্যমে রেকর্ডিয় জমি উদ্ধার করে মানসের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত