ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হলেও চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আগের মতো ইলিশের সরবরাহ দেখা যাচ্ছে না। এতে একদিকে ব্যবসায়ীরা লোকসানের শিকার হচ্ছে, অপরদিকে ক্রেতারাও রয়েছে হতাশায়। কয়েকদিন আগে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোতে কিছু ইলিশ ধরা পড়লেও সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে ইলিশের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য বিজ্ঞানী।
জেলা মৎস্য দপ্তরের তথ্য মতে, চাঁদপুরে ছোট-বড় দেড় শতাধিক মৎস্য আড়ত রয়েছে। এসব আড়তে পাইকারি দরে, ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়, আর ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। তবে হাতিয়া থেকে আসা ইলিশের দাম প্রতি কেজিতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা কম।
চাঁদপুরের আড়তদার শাহজালাল তপাদার ও আতিকুর রহমান বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হলেও পদ্মা-মেঘনায় জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ছে না। অপরদিকে চাঁদপুরের আড়তগুলোতে মিলছে না দক্ষিণাঞ্চল ভোলা, বরিশাল, বরগুনা, পাথরঘাটা, মহিপুর, সন্দীপ, নোয়াখালীসহ সমুদ্রবর্তী এলাকার ইলিশ। স্বল্প পরিমাণ ইলিশ সড়ক পথে আসলেও নদীপথে শিপিং বোটে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না আসায় আড়তদাররা পড়েছেন বিপাকে।
চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বড়স্টেশন মাছ ঘাট ঘুরে দেখা যায়, গত দুই জোতে কিছু পরিমাণ ইলিশ আমদানি হলেও, তা এখন অনেক কম। অথচ গত বছর এসময়ে দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার মণ ইলিশ আমদানি হয়েছে। ফলে ইলিশ আমদানি কম হওয়ায় লোকসান আতঙ্কে মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতা জসিমউদদীন ও মোহাদ্দেস মাহী বলেন, ইলিশের দাম কম শুনে মাছঘাটে এসেছি। দাম বেশি হওয়ায় অল্প কিছু ইলিশ কিনেছি। ফেসবুকে দেখে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসার পর ঘাটের বাস্তবতা দেখে হতাশ হয়েছি। তাই দাম বেশি হওয়ায়, নামমাত্র ইলিশ কিনে বাড়ি ফিরছি। আড়তে ১ কেজি সাইজের প্রতি কেজি ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা, দেড় কেজি সাইজের প্রতি কেজি ১৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা, দেড় কেজি সাইজের উপরের প্রতি কেজি ২ হাজার থেকে ২১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাঁদপুরের ইলিশ গবেষক মো. আবু কাউছার দিদার বলেন, জেলে ও আড়তদারদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। যদিও সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের আড়তগুলোতে প্রচুর ইলিশ আসছে। আশা করছি চলমান মাস ও সামনের পূর্ণিমায় তারা আশানুরূপ ইলিশের প্রাপ্যতা দেখতে পাবে। চলমান জোতে কিছু ইলিশ জেলের জালে ধরা পড়লেও সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে ইলিশের প্রাপ্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই