বরগুনার বেতাগীতে মাকে নির্যাতনের অভিযোগে ছেলে ও পুত্রবধূকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গতকাল রবিবার রাতে বেতাগী থানা পুলিশ ছেলে ও পুত্রবধূকে গ্রেপ্তার করে। আজ সোমবার তাদের আদালতে উপস্থিত করলে আদালত জেল হাজতে পাঠান।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে বেতাগী থানা পুলিশ জানায়, বেতাগী থানার উপ-পরিদর্শক চাঁদ মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার রাতে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলা থেকে পুত্রবধূ জ্যোতির বোনের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। এর আগে গত বুধবার উপজেলার পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের গ্রামীণ ব্যাংক রোড এলাকায় ওই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার ওই মায়ের নাম রীতা রানী বসু (৫৫)। তিনি বেতাগী পৌরশহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শিবু লাল বসুর স্ত্রী। দুই বছর আগে তার স্বামী মারা যান। তার দুই ছেলে রয়েছে। তবে তিনি বড় ছেলে শুভ বসু ও তার স্ত্রী জ্যোতি মৃধার সাথে থাকতেন। এই দুজনের বিরুদ্ধেই দীর্ঘদিন রানী বসুকে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।এর আগে গত বৃহস্পতিবার রীতা রানী বসুর ছোট ছেলে শোভন বসু বাদী হয়ে শুভ বসু ও তার স্ত্রী জ্যোতি মৃধাসহ চারজনের নামে বেতাগী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন জ্যোতি মৃধার মা নীলা রানী মৃধা এবং বাবা সুভাষ মৃধা।
একাধিক প্রতিবেশী জানান, রীতা রানীর স্বামী শিবু লাল বসু মারা যাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন কারণে বড় ছেলে শুভ বসু ও তার স্ত্রী জোটবদ্ধ হয়ে মা– রীতা রানীর ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন।
ঘটনার দিন বুধবার দুপুরে জমির দলিল ও স্বর্ণালংকার চাইলে শাশুড়ির সঙ্গে পুত্রবধূ জ্যোতি মৃধার বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ছেল ও পুত্রবধূ মিলে বৃদ্ধা রীতা রানীকে প্রচণ্ড মারধর করে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেন। স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রীতা রানীর ছোট ছেলে শোভন বসুকে খবর দেন। ছেলে শোভন বসু এসে মাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেন।
শোভন বসু অভিযোগ করেন, বাবার মৃত্যুর পর থেকেই আমার বড় ভাই এবং তার স্ত্রী মিলে বাবার জমি তাদের নিজেদের নামে লিখে নিতে এবং স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করতে চেষ্টা করে আসছিলেন। এ কারণে আমার মাকে বিভিন্ন সময় নানা অজুহাত তুলে নির্যাতন করত। কিন্তু পরিবারে অশান্তি তৈরি হবে ভেবে আমার মা কখনো আমাকে এসব বিষয় অবগত করেননি।
তিনি আরও বলেন, এবার তারা মাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। তা সইতে না পেরে মা আমাকে সব কথা বলে দেন। তাই আমি বাধ্য হয়েই আমার মায়ের নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ