আবহমান বাংলার সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে পাতা (সাপ) খেলা। অসংখ্য দর্শকদের করতালি, উৎসাহ আর উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে উপভোগ করলো গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী তন্ত্রমন্ত্রের ‘পাতা খেলা’। মনোমুগ্ধকর ‘পাতা খেলা’ দেখতে হাজারো নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে। সনাতন হিন্দু ধর্মের পদ্মাদেবী তথা মনসা দেবীর অলৌকিক লীলা থেকে কালের বির্বতনে এ পাতা খেলার উৎপত্তি। মনসাদেবীর অলৌলিক লীলা সনাতন ধর্ম থেকে বাঙালীর সংস্কৃতিতে স্থান করে নিয়েছে।
রবিবার পড়ন্ত বিকালে দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউপির কিষাণ বাজার চকদেওতৈড় গ্রামের মাঠে ঐতিহ্যবাহী এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। আদিবাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির পাতা (সাপ) দর্শকপ্রিয় ও দুঃসাহসী তন্ত্রমন্ত্রের খেলাটি হয়। খেলায় লক্ষণীয় ছিল হাজারো নারী পুরুষ ও শিশু দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। পড়ন্ত বিকালে তান্ত্রিক ও দর্শকেরা মাঠের চারিদিকে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে।
আয়োজক কমিটি জানায়, এই পাতা খেলায় ৫ জন তান্ত্রিক অংশ নেন। কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে চারটি সাপ পাতা হিসেবে মাঠে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর তান্ত্রিকেরা বিভিন্ন নিরগুন বা তন্ত্র-মন্ত্রের বলে সাপকে তাদের কাছে টানতে থাকেন। ঐতিহ্যবাহী এই খেলা দেখতে মাঠজুড়ে উৎসুক জনতার উপচেপড়া ভিড় ছিল। নিজ নিজ দক্ষতা দেখিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন তান্ত্রিকরা। খেলায় প্রথম হয়ে মোবাইল ফোন জিতে নেন দিনাজপুর সদর উপজেলার পারদিঘন গ্রামের দুলাল তান্ত্রিক। দ্বিতীয় স্থান অধিকারী তান্ত্রিককে দেওয়া হয় একটি হাঁস।
প্রথম স্থান অধিকারী দুলাল তান্ত্রিক বলেন, এই খেলা আসলে মনসা পূজার পরপরই হয়ে থাকে। এই খেলা আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। কয়েকজন মিলে সাপ পাতা টেনে নেওয়া হয় মন্ত্র বলে।
আয়োজক কমিটির প্রধান আবু সাঈদ বলেন, তিনদিনব্যাপী বিভিন্ন খেলার আয়োজন করেছি। শেষ দিনে সাপ দিয়ে পাতা খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে তান্ত্রিকের মন্ত্রের শক্তি পরীক্ষা করা হয়। এতে মানুষও আনন্দ পায়।সাপ দিয়ে পাতা খেলা দেখতে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল