সাবমেরিন ক্যাবলে ক্রুটি দেখা দেওয়ায় প্রায় ৮ মাস ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ও চরনাসিরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এতে চরম দুর্ভোগে দিন পার করছে ইউনিয়ন দুটির প্রায় দেড় হাজার পরিবার। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীবেষ্টিত জনবসতি দিয়ারা নারকেলবাড়িয়া ও চরনাসিরপুর ইউনিয়নে স্থাপনের ২ যুগেরও বেশি সময় পর ২০২০ সালে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় ইউনিয়ন দুটিতে। বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় বদলে যায় চরের ২০ হাজার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা। কিন্তু গত ৮ মাস আগে সাবমেরিন ক্যাবলটিতে ক্রুটি দেখা দেওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখনো মেরামত না হওয়ার বিদ্যুৎহীন রয়েছে দুই চরের বাসিন্দারা। নষ্ট হয়ে গেছে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম। স্বাভাবিক জীবনযাপনের পাশাপাশি ব্যহত হচ্ছে ব্যবসা ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা।
চরনাসিরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আমেনা খাতুন বলেন, আমার স্বামী পরিশ্রম করে বাড়িতে এসে গরমে কষ্ট করে। টাকা পায়সা খরচ করে বাড়িতে ফ্রিজ এনেছি, বিদ্যুৎ এর লাইন নিয়েছি। এই সবইতো বেকার গেল এখন৷
দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের এসএসসি পরীক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, বাড়ীতে বিদ্যুৎ নেই। অন্ধকারের মধ্যে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। এই গরমে এতো কষ্ট করে পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফল করতে পারবো বলে মনে হয়না। আমরা তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎ চাই।
দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের আরেক বাসিন্দা রাজা মিয়া বলেন, ঘরে ঘরে ফ্রিজ ও টেলিভিশন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ডিস ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এলাকাবাসী জানেনা আবার করে তারা বিদ্যুৎ পাবে।
দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির সরদার বলেন, কর্তৃপক্ষকে জানাতে চাই, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের এ ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হোক। আমাদের এ ইউনিয়নের বাসিন্দারা এই গরমে অনেক কষ্টে আছে।
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ এর জিএমকে বিষয়টি আমি পত্রের মাধ্যমে বলেছি এবং ওভার ফোনে আমি রেগুলার কমিনিউকেশন করছি। উনি খুব দ্রুতই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবে বলে জানিয়েছেন।
পল্লী বিদ্যুৎ - ২ ঢাকা অঞ্চলের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে। ক্যাবলের উপর অনেক বালি পড়েছে। ফলে বিদ্যুৎ সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। কিভাবে বিকল্প পদ্ধতিতে চর দুটিতে বিদ্যুৎ দেওয়া যায় এটা নিয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একটি কমিটি কাজ করছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম