রংপুরের পীরগাছায় বিরল বিষধর ওয়াল'স ক্রেট সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। সাপটি ধান ক্ষেতে পাতা জালে আটকে পড়েছিল। শনিবার সকালে উপজেলার ওকড়াবাড়ি এলাকার এক কৃষকের জমি থেকে সাপটি উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে কারমাইকেল কলেজ চত্বর থেকে একটি বিষধর গোখরা সাপের বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে, জমিতে কাজ করার সময় এক কৃষক সাপটিকে জালে আটকে থাকা অবস্থায় দেখতে পান। প্রথমে অনেকে এটিকে নির্বিষ দাঁড়াশ সাপ ভেবে ধরার চেষ্টা করেন। সে সময় স্থানীয় মো. কালাম হোসেনের সাপটিকে দেখে সন্দেহ হলে তিনি দ্রুত ‘ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্ন্যাক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান সংগঠনটির পাবলিকেশন সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান সোহেল ও পীরগাছা উপজেলা প্রতিনিধি হাবিবুল বাশার। তারা সাপটিকে সতর্কতার সঙ্গে জাল থেকে মুক্ত করেন। দীর্ঘ সময় আটকে থাকার ফলে এ সময় সাপটির শরীরে আঘাতের কিছু চিহ্ন দেখা গেছে। রেসকিউ টিম জানায়, প্রাথমিক চিকিৎসার পর সাপটিকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াল'স ক্রেট একটি প্রাণঘাতী নিউরোটক্সিক বিষধর সাপ, যা স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত হেনে দ্রুত মৃত্যুর কারণ হতে পারে। দেখতে দাঁড়াশের মতো হওয়ায় এটি সহজেই বিভ্রান্তি তৈরি করে, যার ফলে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে।
ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্ন্যাক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ এর তথ্যমতে, এ ধরনের বিভ্রান্তির কারণে এখন পর্যন্ত যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তার বেশিরভাগই ওয়াল'স ক্রেটকে নির্বিষ দাঁড়াশ ভেবে ধরতে গিয়ে হয়েছে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে দাঁড়াশের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হলেও, পরে ছবির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে সেগুলো ছিল ওয়াল'স ক্রেট।
ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্ন্যাক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ এর মাহমুদুল হাসান সোহেল বলেন, সাপ দেখলেই আতঙ্কিত হওয়া ঠিক নয়। ভুলভাবে সাপ শনাক্ত করলে বিপদ ঘটতে পারে। সাপ মারার পরিবর্তে অভিজ্ঞ রেসকিউ দলের সাহায্য নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।
রংপুর বন বিভাগের বেঞ্জ অফিসার মোশাররফ হোসেন বলেন, পীরগাছায় একটি বিরল এবং বিষধর ওয়াল'স ক্রেট সাপ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন শনিবার দুপুরে কারমাইকেল কলেজ চত্বর থেকে বিষধর গোখরা সাপের বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম